হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস ৩১ আসনে

প্রকাশ | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:৩৪

তানিম আহমেদ

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী আবদুল হাকিমকে পাঁচ হাজার ২৮৭ ভোটে হারান আওয়ামী লীগের দবিরুল ইসলাম। ২০০৮ সালে হাকিম আবার হারেন চার হাজার ৩৭৭ ভোটে। এবারও জেতেন দবিরুল। দুজন এবারও প্রতিদ্বন্দ্বী।

এই ধরনের আসন আছে অন্তত ৩১টি, যেখানে বিজয়ী ও বিজেতার মধ্যে ভোটের পার্থক্য খুব বেশি থাকে না। স্থানীয় বা জাতীয় রাজনীতিতে নানা সমীকরণের ফলে কখনো কখনো উল্টে যায় ফলাফল।

ঠাকুরগাঁওয়ের মতোই একই পরিস্থিতি দিনাজপুর-৬ আসনে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের আজিজুল হক চৌধুরী জামায়াতের আনয়ারুল ইসলামকে ৮৫৮ ভোটে হারান। এবারও বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম। নৌকা নিয়ে লড়বেন শিবলী সাদিক।

২০০১ সালের নির্বাচনে নীলফামারী-৪ আসনে বিএনপির আমজাদ হোসেন সরকার আওয়ামী লীগের মারুফ সাকলানকে দুই হাজার ৯১৪ ভোটে হারান। ২০০৮ সালে পাল্টে যায় সাকলান। তিনি ওই বছর ৮৭ হাজার ৩১৯ ভোট পান। আর শওকত পান ৭০ হাজার ৪৪ ভোট।

কুড়িগ্রাম-১ আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান বিএনপির সাইফুর রহমান রানাকে এক হাজার ৯১৬ ভোটে হারান। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে জোট ছিল না। ২০০৮ সালে মহাজোট হওয়ার পর অবশ্য ভোটের ব্যবধান বেড়ে যায়। তবে এবার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিরও প্রার্থী আছে। ফলে আবারও সেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

২০০৮ সালে জয়পুরহাট-২ আসনে বিএনপির গোলাম মোস্তফা আওয়ামী লীগের আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে তিন হাজার ১৫৯ ভোটে পরাজিত করেন। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন লড়বেন বিএনপির আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে।

নওগাঁও-৫ আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুল জলিল বিএনপির শামস উদ্দিন আহমেদকে দুই হাজার ১৪৭ ভোটে পরাজিত করেন। ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করার পর অবশ্য মহাজোটের ভোট বাড়ে অনেক। এবার এ আসনে প্রয়াত আবদুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিন জলিল জন লড়বেন বিএনপির জাহিদুল ইসলামের ধলুর বিরুদ্ধে।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনে ২০০৮ সালে বিএনপির রুমানা মাহমুদ আওয়ামী লীগের জান্নাত আর হেনরীকে দুই হাজার ১২১ ভোটে হারান। এবার এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবে মিল্লাত মুন্নার বিরুদ্ধে লড়বেন বিএনপির রুমানা মাহমুদ।

২০০১ সালের নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ বিশ্বাস বিএনপির মনজুর কাদেরকে ২৫২ ভোটে পরাজিত করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আবদুল লতিফ বিশ্বাস বিএনপির সহিদুল্লাহ খানকে তিন হাজার ৩২১ ভোটে হারান। তবে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সেখানে জেতে বেশ বড় ব্যবধানে। এবার এ আসনে লড়বেন আওয়ামী লীগের আবদুল মমিন ম-ল লড়বেন বিএনপির আমিরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে।

মেহেরপুর-১ আসনটিতে ১৯৯১ সালে সেখানে আওয়ামী লীগ জেতে ৮৪২ ভোটে। ১৯৯৬ সালে সেখানে বিএনপি জেতে নয় হাজার ২৫৫ ভোটে। তবে ২০০১ সালে বিএনপি এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ জেতে বড় ব্যবধানে জেতেন। 

এই আসনে আওয়ামী লীগের ফরহাদ হোসেন দুদোল এবং বিএনপির মাসুদ অরুণ লড়ছেন সেখানে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে মেহেরপুর-২ আসনে বিএনপির আমজাদ হোসেন আওয়ামী লীগের মকবুল হোসেনকে দুই হাজার ৪৮৯ ভোটে পরাজিত করেন। ২০০১ সালে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরেছিলেন ২০ হাজার ভোটে।

এবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেখানে শাহীজ্জামান খোকন আর বিএনপির জাবেদ মাসুদ মিল্টন।

২০০১ সালের নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসনে ৩৪৬ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের আবদুল হাই। তবে ২০০৮ সালে তিনি ২৩ হাজার ১৫১ ভোটে বিজয়ী হন। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল হাই লড়ছেন বিএনপির আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে চার হাজার ৬৭৭ ভোটে হারায় আওয়ামী লীগ। এর আগের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জেতেন ২০ হাজারের বেশি ভোটে।

এ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাইফুল আলম ফিরোজ লড়ছেন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুল আজীম আনারের বিরুদ্ধে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরীকে পাঁচ হাজার ৪৬৭ ভোটে হারান আওয়ামী লীগের বীরেন শিকদার। ২০০১ সালে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ১০ হাজারের বেশি ভোটে ব্যবধানে জেতে। এবার বীরেন শিকদারের প্রতিদ্বন্দ্বী নিতাই রায় চৌধুরী।

যশোর-১ আসনে আওয়ামী লীগের শেখ আফিল উদ্দিন জামায়াতের আজিজুর রহমানকে পাঁচ হাজার ৬৭৮ ভোটে হারান ২০০৮ সালে। ২০০১ সালে শেখ আফিল উদ্দিন ১২ হাজার ৩২৯ ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন। এবার শেখ আফিলের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মফিকুল হাসান তৃপ্তি।

২০০৮ সালের নির্বাচনে যশোর-৪ আসনে পাঁচ হাজার ৪৩৮ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন আওয়ামী লীগের রণজিত কুমার রায়। ২০০১ সালে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী জিতেছিলেন ২৪ হাজার ৫৪৬ ভোটে। এ আসনে রণজিত কুমার রায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির টিএস আইয়ুব।

খুলনা-২ আসনে ২০০৮ সালে এক হাজার ৬৭০ ভোটের ব্যবধানে জেতেন বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ২০০১ সালের নির্বাচনে ২৯ হাজারেরও বেশি ভোটে জেতেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এবার বিএনপির মঞ্জু লড়ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাতিজা শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে ২০০৮ সালে আট হাজার ৩৫৭ ভোটে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের আ ফ ম রুহুল হক। ২০০১ সালে জামায়াতের এ এম রিয়াছাত আলী বিশ্বাস ১৬ হাজার ৫৯৫ ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার আওয়ামী লীগের আ ফ ম রুহুল হক লড়ছেন বিএনপির শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে।

বাগেরহাট ২ আসনে ২০০৮ সালে সাত হাজার ৮৯২ ভোটে বিজয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগের মীর শওকাত আলী বাদশা। ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী ২৯ হাজার ৩৬৩ ভোটে বিজয়ী হয়েছিল। এবার আওয়ামী লীগের শেখ সারহাম নাসের তন্ময় লড়বেন বিএনপির এম এ সালামের বিরুদ্ধে।

বাগেরহাট-৪ আসনে ২০০১ সালে এক হাজার ৯৭১ ভোটে জেতে জামায়াত। যদিও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ৩৮ হাজার ১২৭ ভোটে জয় পায়। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোজাম্মেল হোসেন লড়ছেন জামায়াতের আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে।

২০০৮ সালে বরিশাল-৪ আসনে চার হাজার ৩৭২ ভোটে জেতেন। তবে ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থী ৪৩ হাজার ৫৮৯ ভোটে জিতেছিলেন। এবার আওয়ামী লীগের পংকজ দেবনাথ লড়বেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নুরুর রহমান জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে।

২০০৮ সালে বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির মজিবুর রহমান সরোয়ার ছয় হাজার ৩০১ ভোটে জয়ী হন। যদিও ২০০১ সালে সরোয়ার ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের মতোই এবারও সরোয়ারের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের জাহিদ ফারুক শামীম।

২০০৮ সালে পিরোজপুর-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ছয় হাজার ৬৩৪ ভোটে হারান আওয়ামী লীগের এ কে এম এ আউয়াল। ২০০১ সালে সাঈদী ৩৩ হাজার ৩৭৭ ভোটে জেতেন। এবার সাঈদীর ছেলে শামীম সাঈদী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগের শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে।

২০০১ সালের নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে দুই হাজার ৮৮৪ ভোটে হেরেছিলেন আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী। তবে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থীকে তিনি ৮১ হাজার ৩৫৬ ভোটে হারিয়ে আসনটি পুনর্দখল করেন। এবার মতিয়া চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী ফাহিম চৌধুরী।

২০০১ সালে নেত্রকোণা-৪ আসনে তিন হাজার ৮৫১ ভোটে জিতেছিলেন বিএনপির লুৎফুজ্জামান বাবর। ২০০৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বাবর ১৪ হাজার ৮৫৮ ভোটে হেরেছিলেন। আর ধানের শীষে বিএনপির প্রার্থী পেয়েছিলেন তিন হাজার ৫২ ভোট। এবার বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান লড়বেন আওয়ামী লীগের রেবেকা মমিনের বিরুদ্ধে।

২০০১ সালে গাজীপুর-৩ আসনে মাত্র ৩৮৫ ভোটে জিতেছিল বিএনপি। তবে ২০০৮ সালে আসনটির সীমানা পরিবর্তনের পর সেটি হয় গাজীপুর-৫। ওই নির্বাচনে বড় ব্যবধানেই জেতে আওয়ামী লীগ। সেই নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী মেহের আফরোজ চুমকি এবং ফজলুল হক মিলন আবার নেমেছেন লড়াইয়ে।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সারাহ বেগম কবরী বিএনপির শাহ আলমকে দুই হাজার ৩৮৯ ভোটে হারিয়েছিলেন। এর আগে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের শামীম ওসমানকে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে হারান বিএনপির গিয়াস উদ্দিন। এবার শামীম ওসমানের প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর মনির হোসাইন কাসেমী।

ঢাকা-১ আসনে ২০০১ সালে বিএনপির নাজমুল হুদা দুই হাজার ৭৭১ ভোটে হারান আওয়ামী লীগের সালমান এফ রহমানকে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের আবদুল মান্নান খান বিএনপির আব্দুল মান্নানকে ৩৪ হাজার ৪২৩ ভোটে পরাজিত করেন। এবার সালমান এফ রহমান লড়ছেন বিএনপির আবু আশফাকের বিরুদ্ধে।

১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইল-২ আসনে ১১ হাজার ৯০৪ ভোটে বিএনপির আবদুস সালাম পিন্টুকে হারান আওয়ামী লীগের খন্দকার আসাদুজ্জামান। পরের নির্বাচনে দুই হাজার ২৭৪ ভোটে জেতেন বিএনপির প্রার্থী। ২০০৮ সালে খন্দকার আসাদুজ্জামান অবশ্য ৪১ হাজার ২০১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনির প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।

টাঙ্গাইল-৩ আসনে ১৯৯৬ সালে ১০ হাজার ৩৭৭ ভোটে বিএনপির লুৎফুর রহমান খান আজাদ জেতেন আওয়ামী লীগের শামসুর রহমান খানের বিরুদ্ধে। ২০০১ সালে পাঁচ হাজার ৬৯৫ ভোটে জেতেন বিএনপির প্রার্থী। তবে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থীকে প্রায় ৪৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান আওয়ামী লীগের মতিউর রহমান। এবার নৌকা নিয়ে লড়বেন আতাউর রহমান খান এবং ধানের শীষে লড়বেন লুৎফর রহমান খান আজাদ।

২০০৮ সালের আসন বণ্টনের পরে কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ নিয়ে কুমিল্লা-৯ আসন গঠন করা হয়েছিল। এ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আনোয়ার উল আজিমকে ৪৫৮ ভোটে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগের তাজুল ইসলাম। ২০০১ সালে এটি কুমিল্লা-১০ আসন ছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ৩৭ হাজার ভোটে হারান বিএনপির প্রার্থী। এবারও লড়াইয়ে নামছে পুরনো দুই প্রতিদ্বন্দ্বী তাজুল ইসলাম ও আনোয়ার উল আজিম।

২০০৮ সালে নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপির মওদুদ আহমদকে এক হাজার ৩৭১ ভোটে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদের। ২০০১ সালে ৩৮ হাজার ৬০৬ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। তবে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী ৪২ হাজার ৩২ ভোট পেয়েছিলেন।

চট্টগ্রাম-১ আসনে ১৯৯৬ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের মোশাররফ হোসেনকে হারান চার হাজার ২৯৩ ভোটে। ২০০১ সালে আসনে বিএনপি প্রার্থী এম এ জিন্নাহ চার হাজার ৫০৬ ভোটে হারান মোশাররফকে। আর ২০০৮ সালে ১০ হাজার ৬৭১ ভোটে জয়ী হন মোশাররফ। এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নুরুল আমিন।