ভোটে জামায়াত থাকছে কি না, সিদ্ধান্ত তিন দিনে

প্রকাশ | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ২৫ জন নেতার প্রার্থী থাকতে পারবেন কি না, নির্বাচন কমিশনকে আর তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

স্বাধীনতাবিরোধী দলটির প্রার্থীদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে সুযোগ দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি হয়েছে।

জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে সুযোগ দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন তানিয়া আমীর।

বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল হক চাঁদপুরী রিটটি করেন। তার একটি রিটেই জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। আর এর ফলে তারা দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়েছে।

রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইনে অনিবন্ধিত দলগুলোর কোনো জোটে যোগ দিয়ে নিবন্ধিত দলের প্রতীকে ভোট করার বিষয়ে কিছু বলা নেই। আর বিএনপির সিদ্ধান্তে জামায়াতের ২১ জন নেতা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়ছেন। আরো চারজন আছেন স্বতন্ত্র পরিচয়ে। আর নির্বাচন কমিশন এদের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছে।

রেজাউল হক চাঁদপুরীর রিটে দাবি করা হয়েছে, যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধন নেই, তাই তারা ভোটে অংশগ্রহণে অযোগ্য। এতে নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ ২২ প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়।

রিটের পক্ষে শুনানি করা তানিয়া আমীর সাংবাদিকদের বলেন, আবেদনকারীরা ইসিতে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এই আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি এ আদেশ দিয়েছেন আদালত।’

ওই চিঠিতে তরীকত নেতা লেখেন, তিনি পত্র পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছে ২৫ জন জামায়াত নেতা তাদের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রেখে অন্য দলের প্রতীক বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। নির্বাচন কমিশনও তাদের বৈধ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে, যা আইনগত বৈধ নয়।

চিঠিতে বলা হয় ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে।

 

জামায়াতের প্রার্থীরা

ধানের শীষ নিয়ে মোট ২১ জন লড়ছেন এই নির্বাচনে। আর একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিএনপির সমর্থনে। এর বাইরে তিনটি আসনে স্বতন্ত্র পরিচয়ে প্রার্থী হয়েছেন তিন জন জামায়াত নেতা।

যারা ধানের শীষ নিয়ে লড়ছেন তারা হলেন: ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, রংপুর-৫ গোলাম রাব্বানী, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ আসনে আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আবদুল আলীম, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা-২ আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ শফিকুর রহমান, কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এবং চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আ ন ম শামসুল ইসলাম।

কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ স্বতন্ত্র পরিচয়ে লড়ছেন বিএনপির সমর্থনে।

এ ছাড়া জামায়াতের তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরা হলেন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ নুরুল ইসলাম বুলবুল, চট্টগ্রাম-১৬ জহিরুল ইসলাম ও পাবনা-১ আসনে নাজিবুর রহমান মোমেন।