কূটনীতিকদের নির্বাচনী সহিংসতার ভিডিও দেখালেন কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:৩৯

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর প্রচারে হামলার ভিডিওচিত্র কূটনীতিকদের দেখিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ইইউসহ ত্রিশ দেশের কূটনীতিকরা সেই ভিডিওচিত্র দেখেছেন। তবে তারা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে সোয়া তিনটা পর্যন্ত রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারসহ, কানাডা, ডেনমার্ক, ব্রিটেন, চীন, তুরস্ক, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রায় ৩০টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

বৈঠকের শুরুতে নিব্যাচনের সার্বিক পরিস্থিতি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। পরে তাদেরকে দেশের নানা জায়গায় প্রচারে হামলার ভিডিওচিত্র দেখানো হয়।

বৈঠকের বিষয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আমিন খান জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কূটনীতিকদের জানিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে দেশে যা হচ্ছে, সরকারি দল বিরোধী দলকে মাঠে দাঁড়াতে দিচ্ছে না এবং মামলা-হামলার বিষয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়েছে। প্রচারণা চালানোর সময় বিভিন্ন স্থানে হামলার ভিডিও ফুটেজও দেখানো হয়েছে তাদের।

বৈঠক শেষে কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিএনপির কেউ নই। আমি আওয়ামী লীগের লোক ছিলাম। ৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর এজেন্ট ছিলাম। সেই সময় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গেছি। কিন্তু এখন রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখনও সেই পরিবর্তন চায়।’

‘জনগণ দেশের মালিক। জনগণ মালিকানা হারালে দেশের স্বাধীনতা আর থাকে না। জনগণের মালিকানার স্বার্থে অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া দরকার। আমার নতুন কিছু বলার নেই। তবে জনগণের আকাঙক্ষা আছে পরিবর্তনের।’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে কামাল বলেন, ‘রাস্তায় এত পুলিশ কখনও আমি দেখিনি। যাকে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা বলছেন, ২ জানুয়ারির পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। এ থেকে প্রমাণিত হয় নির্বাচনে যাতে বিরোধী দল নামতে না পারে সে জন্য পুলিশ এই তৎপরতা চালাচ্ছে। এর ফলে ভোট ছিনিয়ে নেওয়া যাবে, কারণ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে থাকতে দিচ্ছে না।’

এর আগে গত মঙ্গলবার বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ল রবার্ট মিলার। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ল রবার্ট মিলার বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে হলে সব পক্ষকে সহিংসতা পরিহার করতে হবে।

ড. কামাল হোসেন ও নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আমিন খান প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে মূলত আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক ছিল না। আমরা এবার নির্বাচনে যাচ্ছি, তার জন্য ইশতেহার ঘোষণা করেছি, সেটা ছিল বাংলায়। আজ বিদেশি কূটনীতিকদেরকে ইংরেজিতে আমাদের ইশতেহার দিয়েছি।’

রিপন বলেন, ‘ইশতেহারে আমরা কী করতে চাই, তা তাদেরকে (কূটনীতিকদের) জানিয়েছি। এছাড়া আমরা কীভাবে বাধার মুখোমুখি হচ্ছি, হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের শিকার হচ্ছি, তাও জানিয়েছি।’

বৈঠকে কূটনীতিকরা কী বলেছেন জানতে চাইলে রিপন বলেন, ‘বিদেশি কূটনীতিকরা সাধারণত শোনেন, বুঝেন কিন্তু তারা কোনও মন্তব্য করেন না।’

ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/বিইউ/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :