রাজশাহীর উন্নয়নে বাদশার ৪৪ দফা
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ১৪ দল মনোনীত ও মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। ৪৪ দফা এই ইশতেহারে আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজশাহীর উন্নয়নে এক মহাপরিকল্পনা ফুটে ওঠেছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাদশার ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। রাজশাহী ১৪ দলের সমন্বয়ক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের ইশতেহার পড়ে শোনান। এই ইশতেহারে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য এবং যোগাযোগের ওপর বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেন, তিনি মেয়র আছেন, তার সঙ্গে ফজলে হোসেন বাদশা আবারও এমপি নির্বাচিত হতে পারলে প্রতিশ্রুতির সবই পূরণ সম্ভব।
বাদশার ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে ব্যাপকহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের জন্য তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি। তারপর রয়েছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করা এবং শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার অনূকুল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কল-কারখানায় দ্রুত গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা এবং বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ। ইশতেহারে কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন, রাজশাহী রেশম কারখানা পুরোপুরি চালু এবং রাজশাহী টেক্সটাইল মিলের সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার উন্নয়নে রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেন্টাল কলেজ স্থাপন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পকে দ্রুত বাস্তবায়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, নতুন একাধিক স্কুল-কলেজ স্থাপন ও অবশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ, পূর্ণাঙ্গ সঙ্গীত, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী মহাবিদ্যালয় স্থাপন, জনশক্তি রপ্তানিমুখি বিশ্বমানের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগকে ভাষা ইনস্টিটিউট হিসেবে গড়ে তোলা, রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও হাসপাতালের উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ এবং হজরত শাহমখদুম রূপোষ (র.) এর নামে আন্তর্জাতিক মানের থিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণে তার ইশতেহারে রাজশাহী বিমানবন্দরটিকে কার্গো ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ সুবিধাসহ আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নীত করা, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু, রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বিমান সার্ভিস চালু, ঢাকা-রাজশাহী একাধিক বিরতিহীন ট্রেন চালু, রাজশাহীর সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি জাতীয় মহাসড়ককে ৪ ও ৬ লেনে উন্নীত করার ঘোষণা এসেছে। এছাড়া রাজশাহী থেকে সরাসরি হজ ফ্লাইট চালু এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কৃষি আদালত স্থাপনের দাবি বাস্তবায়ন এবং শস্যবিমা চালু করতে নিজের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থী বাদশা বলেন, ‘আমরা এই ইশতেহারে শুধু মৌলিক বিষয়গুলো স্থান দিয়েছি। এর বাইরে অনেক কাজ করেছি এবং করতে চাই। আমরা জনগণের টাকা জঙ্গিদের হাতে তুলে দিতে চাই না, যেমনটি মিজানুর রহমান মিনু করেছিলেন। আমরা রাজশাহী শহরকে যানজটমুক্ত করতে সাহেববাজার ও রেলগেট এলাকায় দুটি ফ্লাইওভারও নির্মাণ করতে চাই। বর্তমান সরকার যেভাবে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন করছে তাতে এই ইশতেহারের ৪৪ দফা পাঁচ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন সম্ভব।’
সংবাদ সম্মেলনে নগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু, নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোজাফফর হোসেন, নগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ডালিম, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ক্রীড়া সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, নগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকম-লীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, নগর জাসদের সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, শফিকুল ইসলাম শফিক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামাণিক, আরিফুল হক কুমার, লিয়াকত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/আরআর/এলএ)