বিএনপির ‘দুর্বলতা’ চার বিভাগ, আওয়ামী লীগের দুই

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ ও সৈয়দ ঋয়াদ
| আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৩:৩৪ | প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৫
ফাইল ছবি: ৩০ ডিসেম্বরের ভোটকে সামনে রেখে পথসভা করছেন ওবায়দুল কাদেরসহ আ.লীগের শীর্ষ নেতারা

অতীতের ভোটের নানা পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, রংপুর, বরিশাল, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগে ভোটে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকে বিএনপি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে তুলনামূলক পিছিয়ে আওয়ামী লীগ। বাকি তিন বিভাগ ঢাকা, খুলনা ও বরিশালের একাংশে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী এবং একাংশে বিএনপি।

২০০১ সালে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার পর বিএনপি তাদের দুর্বল এলাকাতেও সুফল পায় শরিকদের ভোট যোগ হওয়ায়। আবার ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সুফল পায় জাতীয় পার্টির ভোট যোগ হওয়ায়। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের আসনওয়ারী ভোট পর্যালোচনা করে এই চিত্র বের হয়ে এসেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভোটে কী ফলাফল হয়, সেটির এক ধরনের পূর্বাভাস এই পর্যালোচনায় পাওয়ার সুযোগ আছে।

২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের দুই বছর আগে বিএনপির সঙ্গে জোট করেও পরে বের হয়ে আসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তবে জাতীয় পার্টির একটি অংশ তখন বিএনপির সঙ্গে থেকে যায়। আর ওই নির্বাচনে এর কিছুটা সুফল বিএনপি পেয়েছিল। রংপুর ও সিলেট বিভাগ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বেশ কিছু আসনে জাতীয় পার্টির অবস্থানে থাকা এলাকাগুলোতে বিএনপি-জামায়াত জোটের জয় বলে যে, জাতীয় পার্টির একাংশের ভোট তাদের পক্ষেও যায়।

তবে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি জোটবদ্ধ হওয়ার পর দল দুটির সম্মিলিত ভোটের কাছে পাত্তা পায়নি বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০১ সালে জয়ী আসনগুলোতেও বড় ব্যবধানে হারে তারা।

দুই জোটের এই সমীকরণে ২০০৮ সালে ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল এবং ঢাকা বিভাগেও পিছিয়ে পড়ে বিএনপি-জামায়াত জোট। এই চারটি বিভাগের মধ্যে বরিশালে একটি এবং ঢাকায় একটি আসন পায় তারা। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে একটি আসনে ভোটে হেরেও তারা জেতে বিজয়ী প্রার্থীর মনোনয়ন পরে বাতিল হয়ে যাওয়ায়।

অন্যদিকে দুই জোটের সমীকরণের পরও বিএনপি চট্টগ্রাম বিভাগে তার অবস্থান ধরে রাখে ২০০৮ সালে। যদিও দুর্বল অবস্থানে চলে যায় রাজশাহী বিভাগ। কেবল বগুড়া ও জয়পুরহাটে ধরে রাখে তারা অবস্থান।

১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে অংশগ্রহণমূলক টানা ছয়টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, কোনো নির্বাচনেই আগেরবারের চেয়ে ভোট কমেনি আওয়ামী লীগের। বরং বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এটি ঘটেছে আসনওয়ারীও। কোনো আসনে পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি বললেই চলে।

বিএনপির জোট অবশ্য দাবি করছে, আওয়ামী লীগ দেশে দুঃশাসন দিয়েছে। এ কারণে তাদের জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ একটি জরিপ প্রকাশ করে দাবি করেছে, ভোটারদের ৬৬ শতাংশ তাদের পক্ষে।

বিএনপি-জামায়াত জোটের বড় দুর্বলতা রংপুর বিভাগ

১৯৯১ সালে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও রংপুর বিভাগে তাদের অবস্থান ছিল খুবই দুর্বল। ৩৩টি আসনের মধ্যে কেবল পঞ্চগড়-১ আসনে জয় পান মির্জা গোলাম হাফিজ। জামায়াত পায় কেবল দিনাজপুর-৬ আসন।

ওই বছর বিভাগের ১৭টি আসনেই জয় পায় জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগ পায় ১০টি। নৌকা নিয়ে সিপিবি তিনটি ও ন্যাপ একটি করে আসনে জেতে।

এই বিভাগে দুর্বলতা থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেনি দলটি। যদিও ১৯৯৬ সালে তারা তিনটি আসনে জয় পায়। আসনগুলো ছিল পঞ্চগড়-১ ও ২ এবং দিনাজপুর-৩। ওই বছর জামায়াত পায় কেবল নীলফামারী-৩ আসন।

২০০১ সালে জামায়াত ও বিএনপি এক হওয়ার পর অবশ্য সাফল্য পায় এই জোট। নয়টি আসন পায় বিএনপি, জামায়াত পায় চারটি আসন।

তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মহাজোটে অংশ নিলে রংপুর বিভাগে ভোটের চিত্র পুরোপুরি বদলে যায়। ৩৩টি আসনে জয় ভাগাভাগি হয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে। আওয়ামী লীগ ২১টি আসনে এবং জাতীয় পার্টি ১২ আসনে জয় তুলে নেয়। বিএনপি-জামায়াত জোট রংপুর বিভাগের একটি আসনেও জয়ী হতে পারেনি।

সিলেট বিভাগ

১৯৯১ সাল থেকে সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির আসন ছিল কাছাকাছি। বিএনপি পায় কেবল সিলেট-১ আসন। তখন বিভাগে ছিল তবে আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচনে নয়টি এবং জাতীয় পার্টি আটটি আসনে জয়ী হয়। আর একটি আসন পায় ইসলামী ঐক্যজোট।

২০০১ সালে জাতীয় পার্টির একসঙ্গে সঙ্গে সখ্য গড়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় বিএনপি। ওই নির্বাচনে সিলেট বিভাগে বিএনপি নয়টি আসনে জয়ী হয়। আওয়ামী লীগ সাতটি আসনে জয় পেলেও জাতীয় পার্টির ভাগ্যে কিছু জোটেনি। অথচ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সিলেট বিভাগের তিনটি আসনে জয় পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। এগুলো হচ্ছে সুনামগঞ্জ-২, সিলেট-৩ ও হবিগঞ্জ-৩।

সিলেট বিভাগে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্মিলিত ভোটে ছাড়ায় বিএনপি ও জামায়াতের সম্মিলিত ভোট। ওই বছর মহাজোটের সাফল্য ছিল শতভাগ। ওই নির্বাচনে বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে জয় পায় নৌকা। জাতীয় পার্টি পায় মৌলভীবাজার-২ আসন। বেশির ভাগ আসনেই তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতেই ব্যর্থ হয় বিএনপির জোট।

ময়মনসিংহ বিভাগ

নতুন গঠিত ময়মনসিংহ বিভাগে আওয়ামী লীগ বরাবরই প্রতাপশালী। কেবল ১৯৯১ সালেই তারা আসন কম পায় বিএনপির চেয়ে। ওই বছর ২৪টি আসনের মধ্যে ১০টিতে জেতে আওয়ামী লীগ, ১২টি পায় বিএনপি। আর জাতীয় পার্টির ভাগে পড়ে দুটি।

১৯৯৬ সালের এসে চমক দেখায় আওয়ামী লীগ। বিভাগের ১৮টি আসন ছিনিয়ে নেন নৌকার প্রার্থীরা। জাতীয় পার্টি পায় কেবল ময়মনসিংহ-৪ আসন। বিএনপি পায় ময়মনসিংহের তিনটি ও নেত্রকোনার একটি আসন।

২০০১ সালে জামায়াতের ভোট যোগ হওয়ার পর বিএনপি সাফল্য পায়। তাদের আসন তখন বেড়ে হয় ১৪টি। আওয়ামী লীগের আসন কমে হয় নয়টি।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগে জাতীয় পার্টির ভোট যোগ হওয়ার পর ভরাডুবি ঘটে বিএনপি-জামায়াত জোটের। এই বিভাগে কোনো আসনেই জয় পায়নি তারা। ভোটও পায় মহাজোটের অর্ধেকের মতো।

বরিশাল বিভাগ

১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে হারলেও বরিশাল বিভাগের ২৩টি আসনের ১২টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। বিএনপি সাতটিতে, জাতীয় পার্টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি একটি করে আসন পায়।

ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পটুয়াখালী ও ভোলা জেলায় তিনটি করে আসন পায়। এ ছাড়া বরগুনা, বরিশাল ও পিরোজপুর থেকে দুটি করে আসনে জয় তুলে নেয় নৌকা।

বিপরীতে বিএনপি বরিশাল জেলার তিনটি আসন, ঝালকাঠিতে দুটি, পটুয়াখালী, পিরোজপুরে (আংশিক) একটি করে আসন পায়।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বরিশালে আওয়ামী লীগ ১১টি, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি পাঁচটি করে আসন পায়। জামায়াত ও ইসলামী ঐক্যজোট একটি করে আসন পায়।

তখন আওয়ামী লীগ পটুয়াখালীতে চারটি, বরিশালে (পিরোজপুরের একটি অংশ নিয়ে) তিনটি, ভোলা ও বরগুনায় দুটি করে আসন পেয়েছিল।

বিএনপি বরিশাল জেলায় তিনটি, ভোলায় দুটি আসনে জয়ী হয়। এ ছাড়া ঝালকাঠি, পিরোজপুরে দুটি করে এবং বরিশালে একটি আসনে জয় তুলেছিল লাঙ্গল।

২০০১ সালে জামায়াত ও জাতীয় পার্টির একাংশের (বিজেপি) সঙ্গে জোট করে এগিয়ে যায় বিএনপি। সে সময়ের ২৩ আসনের মধ্যে বিএনপি ১৭টি আসনে জয়ী হয়। আওয়ামী লীগ তিনটি, জামায়াত, জেপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী পান একটি করে আসন।

তবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ভোট যোগ হওয়ায় ২০০৮ সালে বিভাগে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় মহাজোট। তখন ২১টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে জয়ী হয় নৌকা। বিএনপি পায় বরিশাল ৪ ও ৫ আসন। জোটের শরিক বিজেপি ভোলা-১ ও মহাজোটের শরিক জেপি পায় পিরোজপুর-৩ আসন।

ক্ষমতা যার ঢাকা বিভাগ তার

১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা বিভাগের আসনগুলোতে অনেক নাটকীয়তা ঘটেছে। ১৯৯১ সালে ঢাকার ৬৬টি আসনের মধ্যে ৪৪টিতে জয় পায় বিএনপি। ১৯টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও জাসদ একটি করে আসনে জয় পেয়েছিল।

তবে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এই চিত্র পুরোপুরি উল্টে যায়। ৬৬টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪১টি বড় জয় পায়। বাকি ২৫টি থাকে ধানের শীষের।

২০০১ সালে আবার বিএনপি ৪২টি আসনে এগিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ পায় ২২টি আসন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ আসনে জয়ী হন। তিনি এখন বিএনপির জোটে।

তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘটে বিস্ময়কর ঘটনা। বিভাগের ৬৬ আসনের প্রতিটিতেই হারে বিএনপি। ভোটের ব্যবধানও ছিল অনেক বেশি। এর মধ্যে ৬৪টি আসন পায় নৌকা। চারটি আসনে জয় পায় জাতীয় পার্টি।

পরে টাঙ্গাইল-৫ জেতা জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল কাশেমের প্রার্থিতা উচ্চ আদালতে অবৈধ ঘোষণা হলে তার চেয়ে ৭৬ হাজার ৪৯৪ ভোট কম পাওয়া বিএনপির মাহমুদুল হাসান হন সংসদ সদস্য।

খুলনা বিভাগে সমানে সমান

খুলনা বিভাগেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই কখনো এগিয়েছে, কখনো পিছিয়েছে। এই বিভাগের ৩৭টি আসনের মধ্যে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ ১৬টিতে জয় তুলেছিল। এর মধ্যে যশোরের পাঁচটি, খুলনায় তিনটি, নড়াইল ও বাগেরহাটে দুটি করে এবং সাতক্ষীরায় একটি আসন পায় তারা।

বিএনপি প্রার্থীরা ওই নির্বাচনে ১৩ আসনে জয় পেয়েছিল। এর মধ্যে ঝিনাইদহে চারটি, কুষ্টিয়ায় তিনটি, খুলনায় দুটি, মেহেরপুর, মাগুরা ও বাগেরহাটে একটি করে আসন পায় তারা। জামায়াত তখন আটটি আসনে জেতে। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় পায় দুটি আসন।

১৯৯৬ সালে ৩৭ আসনের মধ্যে ২২টি পায় নৌকা। এর মধ্যে যশোরের ছয়টি, বাগেরহাটে চারটি, খুলনায় পাঁচটি, সাতক্ষীরায় তিনটি, মাগুরা ও নড়াইলে দুটি করে আসন পায় তারা।

১২টি আসন পায় বিএনপি। কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে চারটি করে, চুয়াডাঙ্গায় দুটি এবং মেহেরপুর ও খুলনায় একটি করে আসন পায় তারা। জাতীয় পার্টি ও জামায়াত পায় একটি করে।

২০০১ সালে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট যোগ হলে বিএনপির আসন বেড়ে হয় ১৯টি। জামায়াত পায় সাতটি। নয়টি পায় আওয়ামী লীগ।

২০০৮ সালে জাতীয় পার্টি ও জাসদের ভোট যোগ হওয়ার সুফল পায় আওয়ামী লীগ। বিভাগের তখন ৩৬টি আসনের মধ্যে ৩১টি পায় আওয়ামী লীগ। যশোর, বাগেরহাট, নড়াইল, মাগুরায় সব কয়েকটি, খুলনার ছয়টির মধ্যে পাঁচটি, কুষ্টিয়ার চারটির তিনটি এবং সাতক্ষীরায় চারটির মধ্যে দুটি আসন পায় তারা। বিএনপি পায় কেবল খুলনা-২ ও মেহেরপুর-২। জাতীয় পার্টি পায় সাতক্ষীরা ২ ও ৪ আসন।

বিএনপির শক্তি দুই বিভাগ

চট্টগ্রাম বিভাগে বরাবর প্রতাপ দেখিয়েছে বিএনপি। ১৯৯১ সালে ৫৯টি আসনের মধ্যে ৩৭টি পায় তারা। তখন আওয়ামী লীগ পায় ১৪টি। জাতীয় পার্টি চারটিতে এবং জামায়াত দুটি আসনে জয়ী হয়েছিল।

ওই নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টির পাঁচটি, কুমিল্লার ১১টির আটটি, চাঁদপুরের পাঁচটির সব কটি, ফেনীর তিনটির দুটি, নোয়াখালীর ছয়টির চারটি, লক্ষ্মীপুরের চারটির সব কটি এবং চট্টগ্রাম জেলার আটটি আসন পায় বিএনপি। কক্সবাজারের চারটির মধ্যে পায় একটি।

১৯৯৬ সালে বিএনপির আসন কিছুটা কমে। তখন তারা পায় ৩৪টি। আওয়ামী লীগের আসন বেড়ে হয় ২৩টি। জাতীয় পার্টি ও জামায়াত একটি করে আসনে জয় পায়।

২০০১ সালে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার সুফল পায় বিএনপি। বিভাগের ৫০টি আসনে তারা এককভাবে, তিনটি পায় জোটের শরিক জামায়াত, ইসলামী ঐক্যজোট একটি, বিজেপি একটি করে আসনে জয় পায়। আওয়ামী লীগ শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, চট্টগ্রাম ৪ ও ৬ এবং বান্দরবান আসনে জয়ী হয়।

২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির ভোট যোগ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের আসন বাড়ে। ওই বছর বিএনপি সারা দেশে যত আসন পায়, তার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগেই ছিল অর্ধেকের বেশি।

ওই নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩২টি আসনে নৌকা, বিএনপি ১৫টিতে, জামায়াত দুটিতে, এলডিপি একটিতে এবং মহাজোট শরিক জাসদ একটি আসন পায়।

রাজশাহী বিভাগেও বিএনপির অবস্থান বরাবরই ভালো। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনেই দলটির ভালো অবস্থা ধরে রাখে। অবশ্য পর পর তিনটি নির্বাচনে তাদের আসন সংখ্যা বাড়লেও ২০০৮ সালে এসে তা আর ধরে রাখতে পারেনি দলটি।

১৯৯১ সালে বিভাগের ৩৯টি আসনের মধ্যে ২৬টিতে জয় পায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ ও জামায়াত সেবার ছয়টি করে আসন পেলেও জাতীয় পার্টি জয় তুলেছিল একটি আসনে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও রাজশাহীতে প্রতাপ বজায় থাকে বিএনপির। সে বছর তারা ২৯টি আসনে জয় তুলে নেয়। আসন বাড়ে আওয়ামী লীগেরও। তারা পায় ১০টি।

২০০১ সালে বিভাগের ৩৩টি আসনে জয় পায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ পায় তিনটি, বিএনপির জোটবন্ধু জামায়াত দুইটি এবং বিজেপির একাংশ একটি আসনে জয় পেয়েছিল।

২০০৮ সালে অবশ্য জাতীয় পার্টির ভোট যোগের পর বিএনপির দুর্গে ফাটল ধরায় আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৯টিতে জয়ী হলেও বিএনপি শেষ রক্ষা হয় আটটি আসনে। ওই বছর রাজশাহী, নওগাঁর ছয়টি করে, এমনকি বগুড়াতেও দুটি আসন জিতে নেয় আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো জয় পায় দুর্বল অবস্থানে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :