পটুয়াখালীতে বিএনপি সক্রিয় একটিমাত্র আসনে

চিন্ময় কর্মকার
 | প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:০০

প্রচার শেষে ভোটের অপেক্ষায় থাকা পটুয়াখালীতে এখন চলছে জয়-পরাজয়ের বিচার-বিশ্লেষণ। চারটি আসনেই সিংহভাগ নির্বাচনে জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের মতোই সব কটি আসনে জয়ের আশা করছে। তবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া বিএনপি অন্তত দুটি আসন নিয়ে আশাবাদী।

চারটি আসনেই প্রচার চলাকালে নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি বিএনপির নিজেদের কোন্দলে। বাকি তিনটিতে দুই পক্ষেই নানা ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরকে অভিযুক্ত করছে।

চারটি আসনেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক সক্রিয় থাকলেও বিএনপি কেবল বাউফল আসনে প্রচারে ছিল একাট্টা। দুটিতে বিএনপির নিজের বিরোধ আর একটিতে কর্মী সংকটে ব্যাহত হয়েছে প্রচার। আর এই কর্মী সংকটের জন্য নাশকতার মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযানকে দায়ী করেছেন বিএনপির নেতারা।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিÑদুই পক্ষেরই অভিযোগ, তাদের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে প্রতিপক্ষ।

চারটি আসনেই ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচারে ছিলেন। তারা এবার ভোটের লড়াইয়ে থাকার আশা করছেন। দুটি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলেও তারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচার চালিয়েছেন। পুলিশ, বিজিবির পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীও আছে ভোটের নিরাপত্তায়। রবিবার অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

পটুয়াখালী-১

সদর, মির্জাপুর ও দুমকি উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে জয় পায় বিএনপি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে জেতে আওয়ামী লীগ। তবে ২০১৪ সালে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয় জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদারকে। এবার তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেননি খেলাপি ঋণের কারণে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য। আর বিএনপি থেকে লড়ছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তিনি ২০০১ সালে জিতলেও বড় ব্যবধানে হারেন ২০০৮ সালে।

দলীয় কোন্দলের স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষ নেই আলতাফের পাশে। আবার তিনি অভিযোগ করছেন বাধার। বলেছেন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা ও মামলার কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে বের হতে পারছেন না এমন সমর্থকরা।

পটুয়াখালী-২

বাউফল উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে ২০০১ সালে বিএনপি জিতলেও এর আগের তিনটি ও পরের দুবার সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগের আ স ম ফিরোজ। ২০০৮ সালে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে তিনি বিএনপিকে হারান ৪০ হাজার ৩৯ ভোটে।

ঘাঁটি ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী ফিরোজ। তবে দলীয় কোন্দল রয়েছে আসনটিতে। আর এই বিষয়টিই ক্ষমতাসীন দলের দুশ্চিন্তার কারণ।

জেলার অন্য আসনের তুলনায় এখানে বিএনপির প্রচার ছিল বেশি ও অনেকটাই নির্বিঘœ। দলটির প্রার্থী সালমা আলম ২০০১ সালে জয়ী শহীদুল আলম তালুকদারের স্ত্রী। ফিরোজের দুর্গে আঘাত হানতে তিনি উদ্্গ্রীব।

পটুয়াখালী-৩

গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি নৌকার দুর্ভেদ্য দুর্গ হিসেবেই পরিচিত। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে জয়ী গোলাম মওলা রনিকে ভাগিয়ে এনে প্রতীক দিয়েছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ প্রতীক দিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাগনে এস এম শাহজাদা সাজুকে। তিনি নতুন প্রার্থী।

রনি বিএনপিতে গেলেও আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের ভাগিয়ে আনতে পারেননি। উল্টো তিনি বিএনপিতেও বিরোধের মুখে পড়েছেন। তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনাটি বিএনপির একাংশ যে ঘটিয়েছে, সেটি ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপেই স্পষ্ট হয়েছে।

বিরূপ পরিস্থিতিতে প্রচার থেকে দূরে সরে থাকা এই প্রার্থী আশায় আছেন অলৌকিকের। আশা করছেন, ভোটে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন নৌকার প্রার্থীকে।

১৯৯১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই এখানে জিতেছেন নৌকার প্রার্থী। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় ভোটের ব্যবধানও প্রতিবারই ছিল ব্যাপক। ২০০৮ সালে ছিল ৫৯ হাজারেরও বেশি।

রনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনকে ব্যবহার করে এলাকা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তবে তিনি মাঠ ছেড়ে যাবেন না।

পটুয়াখালী-৪

১৯৯১ থেকে চারটি নির্বাচনে এখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইটি ছিল একপেশে। টানা পাঁচটি জয় দেখা আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে মুহিব্বুর রহমানকে। নতুন প্রার্থী হয়ে ব্যাপক জনসংযোগ চালিয়েছেন তিনি।

বিএনপি থেকে এখানে লড়ছেন প্রবীণ নেতা এ বি এম মোশাররফ হোসেন। প্রথম দিকে তাকে গণসংযোগ করতে দেখা গেলেও পরপর বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনা ঘটার পর অনেকটা হাল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তার দাবি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে তাদের হয়রানি করছে, হুমকি দিচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

যুবদলের নতুন কমিটির দাবিতে সাবেক নেতাদের  মিছিল 

খুলনায় গির্জায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিএনপি নেতা বকুলের সহায়তা

শ্রমিকদের হত্যাকাণ্ডের বিচারে সময়ক্ষেপণ দেশবাসী মেনে নেবে না: খেলাফত মজলিস

আওয়ামী লীগের যৌথসভা মঙ্গলবার

ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত আনু মুহাম্মদের সুস্থতা কামনা মির্জা ফখরুলের

আসুন সিদ্ধান্ত নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেই: ড. কামাল হোসেন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :