‘ভোট কাকে দেবেন সেই সিদ্ধান্ত এখন নারীর’

প্রকাশ | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:০৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এবার ১০ কোটির বেশি নাগরিক এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেক নারী ভোটার। আর এসব নারী এখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন ভোট কাকে দেবেন। আগে তারা পরিবার কিংবা স্বামীর পছন্দের প্রতীককেই বেছে নিত। সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ও বর্তমানে ভোট দেওয়ার ভাবনার বিষয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জহির রায়হান

ঢাকা টাইমস: ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের পরিবার থেকে প্রভাবিত করার একটি কথা বলা হয়, সে বিষয়ে...

রাশেদা কে চৌধূরী: বাংলাদেশের নারীরা এখন অনেক বেশি সতর্ক। এটা শুধু শহরে-বন্দরে নয়, গ্রামে-গঞ্জেও নারীরা সচেতন। বছর ১০ আগেও নারীদের সঙ্গে যখন কথা বলেছি, তারা বলেছেন নানাভাবে তাদের প্রভাবিত করা হয়। ঘর থেকে, সংসার থেকে, এমনকি শ্বশুর-শাশুড়ি থেকেও। কিন্তু এখন একটা ব্যাপার দেখছি। নারীরা বলেন, ভোট তো দেব ঠিক আছে, স্বামী যদি বলেন, তার কথাটা গুরুত্ব দেব। কিন্তু আমার সিদ্ধান্তটা তো আমিই নিব।’

অতিসম্প্রতি আমি যখন মাঠে গিয়েছি। তারা অনেক বেশি সতর্ক হয়েছে। প্রযুক্তির যুগ তো। সবার হাতেই একটা মোবাইল আছে। বাংলাদেশের নারীরা সুযোগ-সময় পেলে কিন্তু সিদ্ধান্ত ঠিকই নিতে পারে। তার সন্তানের ক্ষেত্রে, লেখাপড়ার ক্ষেত্রে, তার নিজের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে। নারী কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

ঢাকা টাইমস: নারী ভোটারের তুলনায় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে কি?

রাশেদা কে চৌধূরী: নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব বাড়ছে। কিন্তু অংশীদারির জায়গায় কতখানি, মোট ভোটারের অর্ধেক নারী। আমরা নারী সংসদ সদস্য এক-তৃতীয়াংশ থেকে শুরু করতে চাই। ৫০ শতাংশ যেতে সময় লাগবে। আমাদের ঘরে-বাইরে, সমাজে মাইন্ড সেট করতে হবে বিভিন্ন স্তরে নারী প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারে।

ঢাকা টাইমস: কী কারণে রাজনীতিতে তুলনামূলকভাবে নারীদের অংশগ্রহণ কম বলে মনে করেন?

রাশেদা কে চৌধূরী: নারীরা এখনো রাজনীতিতে সেভাবে যান না। এখন রাজনীতির খেলাটা পেশিশক্তি আর টাকানির্ভর। সেটা তো জোগান দিতে পারেন না নারী। সে কারণে ইচ্ছা থাকলেও নারীরা পিছিয়ে যান। সময়মতো তারা অংশ নেন না। নির্বাচনে পিছিয়ে যান।

দ্বিতীয় হচ্ছে, আরপিও অনুযায়ী সব রাজনৈতিক দলের কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ মনোনয়ন নারীদের দেওয়ার কথা। তারা সেটা দেন না। নারীর অংশগ্রহণ আসতে হবে পার্টির মাধ্যমে। সেখানে নির্বাচন করারই সুযোগ দেওয়া হয় না। অনেক দিন থেকে নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বলে আসছি। এক-তৃতীয়াংশ নমিনেশন দিতে হবে।

আরেকটা হলো। সংরক্ষিত আসনে প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচন। পরোক্ষ ভোটে নির্বাচন নয়। সরাসরি নির্বাচন। এটা যে কবে হবে, তা জানি না। আগামীতে যে সরকারই আসবে, তারা যেন এটা বাস্তবায়ন করে, সেটাই চাওয়া।