‘শওকত ওসমান ছিলেন তিন কালের সাক্ষী’

চট্টগ্রাম ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:৪১

কথাশিল্পী শওকত ওসমানের জন্মদিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. অনুপম সেন বলেছেন, ‘শওকত ওসমান ব্রিটিশ-পাক-বাংলা তিন কালের সাক্ষী। ছাত্রজীবনে অর্থনীতির ছাত্র হলেও সমগ্র শিক্ষকতা জীবনে তিনি ছিলেন বাংলার শিক্ষক। এ দৃষ্টান্ত খুব কম জীবনে ঘটে। বঙ্কিমচন্দ্রের দুর্গেশনন্দিনী বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস। পৃথিবীতে কবিতা, নাটক অনেক দিনের পুরনো হলেও উপন্যাস তেমন পুরনো নয়। আমরা গ্রিক নাটক, রোম-ইংরেজি কবিতার কথা জানি। শওকত ওসমান উপন্যাস, নাটক, সমালোচনাধর্মী রম্য রচনা, শিশু সাহিত্যে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন।’

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে শনিবার বিকালে এই সভার আয়োজন করে কথাশিল্পী শওকত ওসমান স্মৃতি পরিষদ চট্টগ্রাম। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সদস্য সচিব ফরিদ মাহমুদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।

অনুপম সেন বলেন, ‘শওকত ওসমানের লেখনিতে ছিল শাসকদের বোকা বানানোর মুন্সিয়ানা। তিনি সমাজকে খুব গভীরভাবে, জীবনকে সংগ্রাম হিসেবে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি প্রতিবাদমুখর ছিলেন। এমন বড়মাপের মানুষকে সপরিবারে হত্যার পর তিনি স্বেচ্ছায় দেশান্তরি হন।’

মুখ্য আলোচকের বক্তব্য দিতে গিয়ে বাংলা ভাষা গবেষক ড. মাহবুবুল হক বলেন, ‘অনন্য বিশিষ্টতা নিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে সমাদৃত হয়ে আছেন। পাকিস্তান আমলে সামরিক শাসনে জাতি তখন নিষ্পেষিত। কবি-সাহিত্যিক মুক্তবুদ্ধি চর্চা বন্ধ করতে লেখকদের আরবি, উর্দু, ফার্সি শব্দ ব্যবহার করে সাহিত্য রচনা করতে চাপ দেওয়া হয়। রবীন্দ্রনাথকে হিন্দু কবি তকমা দিয়ে মুসলমান লেখকদের তার মতো কবিতা লেখার আহ্বান জানান। তখন তিনি ক্রীতদাসের হাসি লিখলেন। ক্রীতদাসের হাসিতে তিনি বাগদাদ-ইরান-বাদশা হারুনুর রশিদের আবহ আনলেন। তিনি তুলে ধরলেন ক্রীতদাসের মুখে যতই কপট হাসি থাকুক শাসকের কাছে শোষক সবসময় ক্রীতদাসই। তার এই রচনায় বিভ্রান্ত হয়ে শাসক শ্রেণি তাকে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার দেয়। শাসক শ্রেণি যখন বুঝতে পারে ক্রীতদাসের হাসি পাকজান্তাদের বিরুদ্ধে এক তীব্র প্রতিবাদ তখন তাদের আর কিছুই ছিল না। বইটি ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।’

অনুষ্ঠানে ড. আহমেদ মাওলা রচিত ‘গদ্যপদ্য জীবনীগ্রন্থ শওকত ওসমান’ এবং ‘শওকত ওসমানের উপন্যাস বিষয় ও শিল্পরূপ’ গ্রন্থ দুটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি নাজিমুউদ্দিন শ্যামল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, দেওয়ান মাকসুদ, পিনাকি দাশ, কাউন্সিলার ফারহানা জাবেদ প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আবৃত্তিকার ও ঘোষক মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

(ঢাকাটাইমস/০৫জানুয়ারি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :