নতুন বছরে সফলতা পেতে অভ্যাস বদলান

প্রকাশ | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৪০

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

পুরনো জীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে এসেছে নতুন বছর। পুরনো ভুলত্রুটি শুধরে নতুন বছরে জীবনের পথ আরও সুগম করে তুলতে চান অনেকে; কিন্তু পুরনো কিছু বদঅভ্যাস আপনার সফলতার জন্য অন্তরায়। তাই নতুন বছরে সফল হতে হলে পুরনো বদঅভ্যাসগুলো ঝেড়ে ফেলতে হবে। জেনে নিন সেসব অভ্যাস সম্পর্কে।

নতুন বছরের শুরুতেই কঠিন ও অসম্ভব প্রতিজ্ঞা করে ফেলার কোনো দরকার নেই। বরং আপনি আমিষাশী হলে সপ্তাহে একটা দিন নিরামিষ খেতে শুরু করুন। এমনিতেই সারা সপ্তাহ প্রচুর মাছ-মাংস খাওয়া চলে, তাই একটা দিন পাকস্থলীকে একটু পরিশ্রম করান। এতে শরীর অনেকটাই ভালো থাকবে। হজম ক্ষমতাও বাড়বে।

যানবাহনে যাওয়ার সময় সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকেন? একটু অন্য রকম করে দিন নিয়ম। বই পড়তে ভালোবাসলে বা গান শুনতে পছন্দ করলে এই সময়টা কাজে লাগান। এতে সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তিও কমবে আবার প্রিয় শখ বজায়ও থাকবে।

অফিসের কাজের চাপ কি দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার বিরতিতেও এসে পড়ে? কোনোমতে খাবারটা খেয়েই আবার চেয়ারে গিয়ে বসে পড়েন? তাহলে এ বছর থেকে এই নিয়ম বদলে ফেলুন। বরং হাতে কিছুটা সময় রাখুন। খাওয়ার পর কয়েক পা হেঁটে আসুন। মিনিট পনেরো হাঁটলে শরীরের বিপাক হার বাড়িয়ে খাবার হজম করা সহজ হবে ও ওবেসিটির ভয়ও অনেকটা কাটবে।

বছরের শুরুতেই অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল ফেলে দিন। ই-মেইলের ইনবক্সে একগাদা অ-দরকারি মেইল জমিয়ে রাখার অভ্যাস তাড়ান। এতে দরকারি মেইল খুঁজে পেতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই জীবনের একটা দিক অন্তত গুছিয়ে ফেলতে পেরেছেন দেখে মানসিক তৃপ্তিও পাবেন।

স্বাস্থ্যকর জীবন চাইলে হঠাৎ হঠাৎ বাইরে খেতে যাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়তি খাবারে আস্থা রাখেন যারা, তাদের শরীরে অন্যদের তুলনায় প্রতি সপ্তাহে ১৭৩ ক্যালোরি ও প্রতি দিন প্রায় ১৬ গ্রাম করে কম চিনি প্রবেশ করে। সুতরাং মাঝে মাঝে বাইরে খান ক্ষতি নেই, কিন্তু কথায় কথায় রেস্তোরাঁ আর নয়।

অনিদ্রা বা কম ঘুমকে এ বছর প্রথম থেকেই তাড়ান। তাই বদলে ফেলুন নিজের কিছু অভ্যাস, সারাক্ষণ খুব নিয়ম মেনে চলতে না পারলেও অন্তত ঘুমানোর আগে মোবাইলটি সরিয়ে রাখুন। এতে ঘুম না আসার অভ্যাসকে আয়ত্তে আনতে পারবেন অনেকটাই। মানসিক চাপও কমে যাবে প্রায় কয়েক গুণ।

বাইরে খাওয়া কমিয়ে দেওয়া মানেই কিন্তু একেবারে বন্ধ করে দেওয়া নয়। যে কয়টা দিন বাইরে খেতে ইচ্ছা করবে সে সব দিনে নিজের কমফর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসুন। বরং কখনও খাননি এমন কোনো ডিশ অর্ডার করুন পছন্দের রেস্তোরাঁয়। এতে নানা কুইজিনের সঙ্গে পরিচয় যেমন হবে, তেমনই প্রিয় খাবারের তালিকাও বাড়তে পারে।

রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট নিজের ত্বককে দিন। খুব বেশি কিছু না পারলেও যতটুকু পরিচর্যা সুস্থ ত্বকের জন্য দরকার, সে টুকু দিন। এতে ত্বকের জেল্লা যেমন বাড়বে, তেমনই একেবারেই শরীরের কোনও যতœ নিতে না পারার আক্ষেপও ঘুচবে।

ঘন ঘন না হলেও অন্তত বছরে দুইবার বেড়াতে যাওয়ার সময় রাখুন হাতে। পকেটে খুব চাপ দিতে না চাইলে ধারেকাছেই ঘুরে আসুন প্রিয়জনদের সঙ্গে। একান্তই দূরে যাওয়ার সময় করে উঠতে না পারলে অন্তত কোনো আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ঘুরে আসুন কয়েকটা দিন। এতে কাজের থেকে মুক্তি যেমন মিলবে, তেমনই অবসাদ দূর হয়ে পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে।

বছরের প্রথম দিন থেকেই কিছু কিছু করে টাকা জমান। সারা দিনের খরচের পর বাজেটের বেঁচে যাওয়া টাকা জমিয়ে রাখুন। এতে মাসের শেষে বেশ কিছুটা টাকা হাতে থেকেই যায়। তার ওপর জমানোর অভ্যাসটাও আলাদা করে তৈরি হয়। সারা বছর কাজের চাপে প্রায় কারও সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতে পারেন না? 

পরিবার ও ঘনিষ্ঠ মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন। অন্তত সপ্তাহে এক দিন কোনো ঘনিষ্ঠ জনকে ফোন করুন, পারলে দুই তিন মাসের ব্যবধানে একটা ছোটখাটো আড্ডার আয়োজন সেরে ফেলুন। এতে ব্যস্ত রুটিনের মাঝে নিজেরও খানিকটা ঝরঝরে লাগবে।

(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/এজেড)