হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার মামলায় ওয়েটার-ইলেকট্রিশিয়ানের সাক্ষ্যগ্রহণ
বহুল আলোচিত গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় রেস্টুরেন্টটির এক পরিচারক (ওয়েটার) ও এক ইলেকট্রিশিয়ানের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ওয়েটার মো. আশরাফুজ্জামান ও খণ্ডকালীন ইলেকট্রিশিয়ান লাজারুশ সরেন ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের ওই জঙ্গি হামলার বর্ণনা দেন। পরে তাদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আগামী ১০ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
সাক্ষ্যে আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার দিন রাত সাড়ে আটটা থেকে পৌনে নয়টার দিকে বিকট শব্দ শুনতে পাই। এরপর দেখি, মেইন গেটের ভেতরে অস্ত্রধারী দুই যুবক দাঁড়িয়ে আছেন। পরে লেকভিউ এ আশ্রয় নেই। রাত ১২টার দিকে র্যাব পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমাকেসহ কয়েকজনকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরদিন সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে।’
লাজারুশ সরেন বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার স্ত্রী ফোন করে জানান, হলি আর্টিজান রেস্তোঁরায় গোলাগুলি হচ্ছে। বাইসাইকেলে সেখানে ছুটে যাই। কিছু সময় পর পুলিশের গাড়ি এলে সন্ত্রাসীরা সেগুলো লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে। এতে পুলিশ সদস্যরা এবং আমি আহত হই।’এ নিয়ে মামলাটিতে আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো। মামলার আট আসামির মধ্যে ছয়জন হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, হামলায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী এবং হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ কারাগারে রয়েছেন। অন্য দুই আসামি মো. মামুনুর রশিদ ও মো. শরিফুল ইসলাম পলাতক।
মামলায় পুলিশ অভিযোগ করেছে, জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা ‘আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে’ রে¯েঁÍারাটিতে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। জঙ্গিদের ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। আত্মরক্ষার্থে আমরাও পাল্টা গুলি চালাই। এরপর তারা পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালালে ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন। যৌথ বাহিনী পরে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। ’
গত ২৬ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। গত ৩ ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
গত বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (সংশোধনী ২০০৩) ৬(২)/৭/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
(ঢাকাটাইমস/৬জানুয়ারি/ জেডআর/এআর)