মন্ত্রী নেই ২৯ জেলায়

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৪

তানিম আহমেদ

নতুন মন্ত্রিসভায় আছেন ৩৫ জেলার প্রতিনিধি। বাকি ২৯ জেলার কোনো সংসদ সদস্য স্থান পাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ সরকারে এলে সব সময় মন্ত্রী থাকে, এমন বেশ কিছু জেলাও বঞ্চিত হয়েছে এবার।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর থেকেই প্রায় প্রতিটি জেলাতেই মন্ত্রিত্বের দাবি উঠে। মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, মিছিল বা অন্য নানাভাবে দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাসিন্দারা।

তবে আজ শপথ নিতে যাওয়া মন্ত্রিসভার সদস্যদের যে তালিকা গতকাল দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায় কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, ফরিদপুর, ভোলা, মাদারীপুর জেলার কোনো সংসদ সদস্য স্থান পাননি মন্ত্রিসভায়। অথচ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এই জেলাগুলো থেকে সব সময় এক বা একাধিক নেতা মন্ত্রী হয়ে আসছিলেন।

রংপুর বিভাগের নীলফামারীতে টানা দুই মেয়াদেই মন্ত্রী ছিল। কিন্তু সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে নতুন করে মন্ত্রিত্ব না দেওয়ার পর অন্য কাউকে এই জেলা থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

বিলুপ্ত হতে যাওয়া মন্ত্রিসভায় দিনাজপুরে দুই জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী থাকলেও এবার একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হচ্ছে সেখানে। বাদ পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। গতবারের মতো এবারও এ বিভাগের ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধা জেলায় কোনো মন্ত্রী নেই। আওয়ামী লীগ গত চারটি সরকারের মধ্যে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী করেছে পঞ্চগড়ে।

রংপুর ও লালমনিরহাটে একজন করে মন্ত্রী ও কুড়িগ্রামে এক প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে। 

স্বাধীনতার পরেই আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছিলো ততবারই সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলায় মন্ত্রী ছিল। কিন্তু এবার শূন্য দুটি জেলা। জয়পুরহাট, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোনো নেতাই স্থান পাননি। রাজশাহী ও নাটোর একজন প্রতিমন্ত্রী এবং নওগাঁ একজন মন্ত্রী পেয়েছে।

খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, নড়াইল, সাতক্ষীরা জেলায় কোনো মন্ত্রী নাই।

খুলনা, যশোর ও মেহেরপুর একজন করে প্রতিমন্ত্রী এবং বাগেরহাট একজন উপমন্ত্রী পেয়েছে।

বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলায় কোনো মন্ত্রী নেই। পিরোজপুর থেকে নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারই মন্ত্রিসভায় আসছেন শ ম রেজাউল করিম। আর বরিশাল সদর আসনের জাহিদ ফারুক শামীম হচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ঘাঁটি ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার তিন জেলা থেকেই মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব থাকছে। কেবল শেরপুরের কেউ নেই। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বাদ পড়েছেন মতিয়া চৌধুরী।

নেত্রকোনা থেকে টেকনোক্র্যাট কোটায় একজন পূর্ণমন্ত্রী ও একজন হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। ময়মনসিংহ থেকে দুই জন ও জামালপুর থেকে একজন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। 

ঢাকা বিভাগও বেশ পিছিয়ে। ইতিহাসে প্রথম মন্ত্রী নেই ফরিদপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার। মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী জেলারও কোনো মন্ত্রী নেই।

টাঙ্গাইল একজন পূর্ণমন্ত্রী পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও টেকনোক্র্যাট কোটায় গোপালগঞ্জের একজন প্রতিমন্ত্রী আছেন। শরীয়তপুর একজন উপমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ পেয়েছে একজন মন্ত্রী। ঢাকার একজন পূর্ণমন্ত্রী ও তিন জন আছেন প্রতিমন্ত্রী। গাজীপুরের আছেন একজন করে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। নরসিংদী এবং নারায়ণগঞ্জ পেয়েছে একজন করে মন্ত্রী।

সিলেট বিভাগ সবচেয়ে বেশি মন্ত্রিত্ব পেয়েছে। সব জেলা থেকেই আছে প্রতিনিধিত্ব। সিলেট জেলায় আছেন একজন করে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার একজন করে মন্ত্রী এবং হবিগঞ্জ পেয়েছে প্রতিমন্ত্রী।

তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি পেয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, বান্দরবানে একজন করে মন্ত্রী পেয়েছে। কুমিল্লা পেয়েছে দুই জন। তাও আবার অর্থ ও এলজিআরডির মতো বড় মন্ত্রণালয়।

চট্টগ্রাম জেলা পেয়েছে তিন জন পূর্ণমন্ত্রী, যাদের একজন টেকনোক্র্যাট কোটায়। উপমন্ত্রীও আছেন একজন।

এই বিভাগের ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলার কেউ নেই মন্ত্রিসভায়।