পাকিস্তানের দুর্গম এলাকার এক ‘সুপারওম্যান’
পাকিস্তানের অর্ধেকের কম নারী সন্তান জন্মদানের সময় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর সহায়তা পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে, প্রত্যন্ত পার্বত্য এলাকাগুলোকে গর্ভবতী নারীদের সন্তান জন্ম দিতে হয় কার্যত কারও সহায়তা ছাড়াই। শেরবানু তার অভিজ্ঞতা থেকেই জানেন এটি কতটা কঠিন একটা কাজ। আর সে কারণেই তিনি ভাবলেন এ শূন্যতা তিনি পূরণ করবেন এবং এটিই তাকে পরিণত করল ওই অঞ্চলের প্রথম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীতে। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে কখনো গুনে দেখিনি কিন্তু এটি নিশ্চিত কমপক্ষে এক শ শিশুর জন্ম হয়েছে আমার হাত ধরেই।’
তিনি জানান, সন্তান জন্মদানের সহায়তার বিনিময়ে তিনি অর্থ নেন না। এ বিষয়ে শেরবানু বলেন, ‘কেউ খুশি হয়ে চা খেতে দেয় আবার কেউবা হাতে এক শ রুপি দেয়। এ এলাকার মানুষ গরিব এবং তাদের অনেকেরই কাজ নেই।’ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যখন আমার নিজের প্রথম সন্তান হয়েছিল, তখন পুরো গ্রামে কোনো ধাত্রী ছিল না। দুই-তিন দিন আমি কষ্ট করেছি সন্তান জন্মের সময়। সে সময় কারও সহায়তা পাইনি। তখনই কষ্টটা অনুভব করেছি। আর সে কারণেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এটিই ভালো করে শিখব।’
শেরবানু বলেন, ‘পার্বত্য এলাকায় কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধাই নেই। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে কোনো গাড়িও পাওয়া যায় না। কিন্তু দিনে বা রাতে যখনই হোক, কেউ ডাকলেই আমি চলে যাই।’ স্থানীয় নারীদের কাছে শেরবানু রীতিমতো সুপারওম্যান, যিনি নারীদের সহায়তার জন্য নিজেই মিডওয়াইফ কিট কিনেছেন এবং তার আছে নিজস্ব প্রেশার মাপার যন্ত্র। গ্রামের গর্ভবতী নারীদের খোঁজ থাকে তার কাছে এবং নিজেই ঘুরে ঘুরে খবর নেন, প্রেশার মাপেন। শেরবানুর আশা, একদিন তার এলাকার সব মেয়েই প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
(ঢাকাটাইমস/৮জানুয়ারি/এসআই)