‘হলে উঠতে শিবির ছাড়তে হবে ছাত্রদলকে’

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৪ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৫৬

এন এইচ সাজ্জাদ

জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সম্পর্ক ছাড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের পক্ষে সহাবস্থান সম্ভব। বলেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। বলেছেন, তারা ডাকসু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন আর জয়ের ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী।

আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা আছে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে এরশাদ সরকারের পতনের পর আর কখনো এই নির্বাচন হয়নি বলে এবারের ঘোষণা নিয়ে বিশেষ আগ্রহ আছে।

তবে এই নির্বাচন নিয়ে ক্যাম্পাসে সহাবস্থান, ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় সামনে এনে আগে সেগুলো নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠন ছাত্রদল। এই বিষয়গুলো নিয়েই ঢাকা টাইমসের মুখোমুখি হন রাব্বানী।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রদলের কর্মীরা হলে থাকতে পারেন না। তারা অবস্থান করতে না পারলে নির্বাচন হবে কীভাবে?

ছাত্রদল করার কারণে কাউকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। যারা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে মিথ্যাচার, গুজব ও অপপ্রচার ছড়িয়ে সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে, তাদের আমরা নিষেধ করেছি।

১৩টি প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠন, যারা ডাকসু নির্বাচনের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন, তাদের সবার প্রতিনিধি ক্যাম্পাস আছে এবং হলে থাকার অধিকার আছে। তবে যারা ক্যাম্পাসে শান্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা সব সময় করে, তাদের তো আমরা সুযোগ দিতে পারি না।

ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হলে তাদেরকে প্রথমত ‘শিবির’ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে হবে, দ্বিতীয়ত অতীতের সকল কুকর্মের জন্য সবার কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং নিয়মিত ছাত্র হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসা।

নানা সময় তো আপনাদের ছাত্রসংগঠনের দ্বারা বিরুদ্ধ ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের অভিযোগ আছে।

এই রকম যদি অভিযোগ আসে, তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে, যার প্রমাণ শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের জন্যও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন হয়নি। শতভাগ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ ভাগ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, বাকি ৭০ শতাংশ অন্য ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থী রয়েছেন।

কিন্তু সহাবস্থান আর হামলার বিষয়টিকেই তো ডাকসু নির্বাচনের বাধা হিসেবে দেখাচ্ছে ছাত্রদল। তারা যদি আপত্তি তোলে, তাহলে কি এই নির্বাচন সম্ভব?

ছাত্রলীগও চায় নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা অর্পিত হোক আর প্রতিনিধিরাই শিক্ষার্থীদের অধিকার, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির কথাগুলো কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরুক। ডাকসু নির্বাচনকে বাস্তবে রূপ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

তাহলে এই নির্বাচনের আর কোনো বাধা নেই বলে দাবি করছেন?

সকল ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন নির্বাচনের ব্যাপারে একমত হয়েছে এবং যেখানে কোনো বাধা-বিপত্তি আপাতত ছাত্রলীগ দেখছে না। তবে নির্বাচনটা করা, কখন কীভাবে হবে সেই এখতিয়ার সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

সেই সময়ে (১৯৯০ সালে) শুধু ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে সময় লেগেছে দুই বছর। আশা করি, এবার যাতে এ রকম কোনো কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

নির্বাচন হলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর ক্ষমতা খর্ব হবে বলে মনে করেন?

অবশ্যই না। আমি মনে করি, ছাত্রসংগঠনের ভূমিকা তখন আরও বাড়বে। কারণ তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রের ভোটের দ্বারা ছাত্র প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন।

আমরা (ছাত্রলীগ) এমন কিছু করতে চাই, যা আগে কেউ করেনি। ইউনিক (বিশেষ) কিছু করার সামর্থ্য আমাদের এই কমিটির মধ্যে আছে। আমরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করে ডাকসু নির্বাচনে ভিপি ও জিএস পদে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করব।