‘হৃদয় চুরির’ অভিযোগ নিয়ে থানায় যুবক
ঘটনা ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের নাগপুরের একটি থানার। একদিন সকালে হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকলেন এক যুবক। থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে গিয়ে তিনি বললেন, ‘স্যার আমার গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হয়ে গেছে! খুঁজে দিতে হবে।’ পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ লেখার ডায়েরিটা বের করে ‘কী হারিয়েছে। কোথা থেকে হারিয়েছে’ ইত্যাদি জানতে চান ওই যুবকের কাছে। কিন্তু যে উত্তর অভিযোগকারীর কাছ থেকে এল, তা শুনেই প্রায় ভিমরি খাওয়ার অবস্থা হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তার।
থানায় ঢুকেই ওই যুবক বলেন, ‘স্যার, আমার হৃদয় চুরি হয়ে গেছে। একটি মেয়ে চুরি করেছে সেই হৃদয়। সেই হৃদয় ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে আপনাদেরই।’ এমন অভিযোগের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা। ফলে যুবকের কথার কী উত্তর দেবেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না তিনি। অভিযোগটাই বা কী করে দায়ের হবে? এমন হৃদয়হরণ সংক্রান্ত কোনো ধারাই তো নেই ভারতীয় দ-বিধিতে। তাহলে? উত্তরের খোঁজে আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করেন থানায় কর্তব্যরত ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
অভিযোগের ধরন শুনে তারাও তাজ্জব হয়ে যান। কিন্তু অভিযোগ যখন এসেছে একটা সমাধান তো করতেই হয়। কর্মকর্তারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন সমাধানের খোঁজে। নাহ! অনেক ভেবেও কোনো উপায় বার করতে পারেননি দুঁদে কর্মকর্তারাও। শেষমেশ ঘুরেফিরে তারা সেই সিদ্ধান্তেই আসেন যে, এ ধরনের অভিযোগের জন্য ভারতীয় দ-বিধিতে কোনো ধারাই নেই। অভিযোগকারী ওই যুবককেও তা জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অভিযোগও দায়ের হয়নি আর। হৃদয় ফিরে পেতে এসে শেষমেশ খালি হাতেই ফিরতে হয় ওই যুবককে। ফলে ‘চুরি যাওয়া হৃদয়’ আর উদ্ধারও হয়নি।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে নাগপুরের পুলিশের কমিশনার ভুষণ কুমার উপাধ্যায় নিজে এই অদ্ভুত অভিযোগের কাহিনি শুনিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে মৃদু হেসে তিনি বলেন, ‘চুরি যাওয়া সামগ্রী আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি, কিন্তু চুরি যাওয়া হৃদয় কি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। তাই এ ধরনের অভিযোগ এলে সমাধানের পথ খুঁজতে হাতড়ে বেড়াতে হয় পুলিশকে। যেমনটা ঘটেছে ওই যুবকের করা অভিযোগের ক্ষেত্রে।’
(ঢাকাটাইমস/৯জানুয়ারি/এসআই)