কম টাকায় সোনার বার কিনে দেওয়ার নামে প্রতারণা করতো ওরা
শুল্ক বিভাগের জব্দ করা সোনা কম টাকায় নিলামে কিনে দেবে বলে জানিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। নিজেদের শুল্ক বিভাগের সহকারী কমিশনার পরিচয় দিতেন চক্রের সদস্যরা। পাঁচ বছর আগে একটি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে প্রতারণাই ছিল এই চক্রের নেতার মূল কাজ।
এই প্রতারক চক্রের গ্রেপ্তারকৃত তিন সদস্যের বিষয়ে জানাতে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেখানে এসব তথ্য জানান সিআইডির সিরিয়াস অ্যান্ড হোমিসাইডাল স্কেয়ার্ডের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা।
বুধবার রাজধানীর রমনার বেইলি রোডের নবাবি ভোজের সামনে থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শুল্ক কমিশনার পরিচয় দেওয়া খন্দকার মো. ফারুক ওরফে ওমর মবিন এবং তার দুই ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) পরিচয় দেওয়া মো. ইলিয়াস ওরফে নুর ইসলাম সরকার এবং সাইফুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮টি ভিজিটিং কার্ড, চারটি ব্যাংকের চেকের পাতা, সাতটি মোবাইল ও ১৩টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা শুল্ক বিভাগের জব্দ করা সোনার বার কম টাকায় নিলামে কিনে দেবেন বলে জানিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ওমর মবিনের মোবাইলে পাওয়া মৃণাল নামের একজনের মোবাইল নম্বরে ফোন করে জানা গেছে, তাকে নিলামে মাল কিনে দেবেন জানিয়ে গত ৬ জানুয়ারি ২৪ লাখ টাকা নিয়েছেন। পরে আসামি ওমর মবিনের মোবাইলের হোয়াটস অ্যাপের মেসেজে ৪০ কোটি টাকার চেকের কপি ও অসংখ্য ফাঁকা চেকের কপি পাওয়া যায়।
সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, ‘তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কখনো নিজেদের শুল্ক বিভাগের কমিশনার, কখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন ভিকটিম সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃত খন্দকার মো. ফারুক ওরফে ওমর মবিন পাঁচ থেকে সাত বছর আগে একজন সংসদ সদস্যের পিএস হিসেবে কাজ করতেন। পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত হন। চক্রটির সদস্যদের নিয়ে তিনি রাজধানীর বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে যেতেন, যেন তার প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিরা বুঝতে পারেন, এরা বড় মাপের মানুষ।
তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের আজ আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে সিআইডি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সিআইডির সিরিয়াস অ্যান্ড হোমিসাইডাল স্কেয়ার্ডের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব ফারহান, রুহুল আমিন ও উপ-পরিদর্শক নিউটন কুমার দত্ত।
(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/এএ/এআর)