ভোট হয়ে যাচ্ছে ‘টের পাননি’ কামাল

প্রকাশ | ১০ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট যে হয়ে যাচ্ছে সেটি টের পাননি বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন। রাষ্ট্র এবং ১৭ কোটি মানুষকে নিয়ে এভাবে খেলা করা যায় না বলেও মন্তব্য করেছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। নতুন নির্বাচনের পথ বের করতে সরকারকে ‘জাতীয় সংলাপ’ ডাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন কামাল হোসেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে কামালের নিজের দল গণফোরাম।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অন্যদিকে বিএনপিকে নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট আটটি আসনে জিতেছে। এছাড়া অধিকাংশ আসনেই তাদের প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি জোটকে জনগণই ভোট দেয়নি। অন্যদিকে ভোট ডাকাতি হয়েছে দাবি করে নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট।

সরকারের উদ্দেশে কামাল বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর যেটা হয়েছে, এটাকে কি অবাধ নির্বাচন হয়েছে কেউ বলবে? আসুন বছরের প্রথম দিকেই সঙ্কট সৃষ্টি না করে সবার সঙ্গে জাতীয় সংলাপ করুন। সংলাপের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হোক, কীভাবে আমরা সংবিধানকে মেনে নির্বাচন করে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার গঠন করব।’
ভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভাবতে পারিনি ৩০ ডিসেম্বরের যে ঘটনা, সেটা ৪৮ বছরের পরে এটা দেখতে হচ্ছে। আমি তো সরলভাবে বলেছিলাম, ভাই সকালে সকালে গিয়ে ভোট দেবেন। টেলিভিশন বলছে, কামাল হোসেন বুঝতে পারছেন না ঘটনা তো রাতেই ঘটে গেছে। ২৯ তারিখ রাতেই।’

‘যেভাবে ভোট হল আমরা কেউ টেরও পেলাম না যে আমাদের ভোট হয়ে যাচ্ছে। এটা কেন এভাবে করতে হবে? এরকম অস্বাভাবিক কাজ কেন হচ্ছে? এর থেকে ঘোষণা দিয়ে দেন- থার্ড টার্মের জন্য একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন, তিনশ সদস্য সাংসদ হয়ে গেছেন।’
‘এটা খেলা না কি? ১৭ কোটি মানুষকে নিয়ে কি খেলা করা যায়? রাষ্ট্র নিয়ে এভাবে খেলা করা চলে না। যারা এসব করছে, তারা না বুঝে করছে। আমি মনে করি, মানসিকভাবে ভারসাম্য না হারালে কেউ এসব করতে পারে না।’

কামাল বলেন, ‘নির্বাচনে সরাসরি মানুষ ভোট দেবে, ফলাফল হবে। এটা অন্য কোনো কায়দায় নিলে তা দেশে স্থিতিশীলতা আনে না, বৈধতাও আনে না। এই ধরনের চালাকির অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু বলতেন রাজ চালাকি। আমরা রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছি রাজ চালাকিতে।’

‘৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা রাজচালাকির একটা সুন্দর উদাহরণ। রাজ চালাকি থেকে বিরত থাকুন, জনগণের সামনে সব কিছু তুলে ধরুন। সংবিধান অনুযায়ী, আলাপ-আলোচনা করে যা করার করুন।’

অনুষ্ঠানে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাইয়িদ, আমসা আমিন, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মোকাব্বির খান, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বীর প্রতীক, আসাদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।###