ভোটে অনিয়ম

প্রতিবেদন পাঠাতে ব্যর্থ রাজশাহী বিএনপি

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৪৮

রিমন রহমান

ভোটে অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রে পাঠাতে রাজশাহীর পাঁচ নেতাকে চিঠি দিলেও তারা তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ৩ জানুয়ারি চিঠি দিয়ে ১০ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।

রাজশাহী বিএনপির নেতারা জানান, তথ্য পেতে তারা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। নির্বাচনে ‘অনিয়মের’ তথ্য সংগ্রহের পর প্রার্থীরা তা প্রতিবেদন আকারে দলের কেন্দ্রে জমা দেবেন।

নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে না পারার বিষয়ে রাজশাহী-৩ আসনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী শফিকুল হক মিলন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের যারা পোলিং এজেন্ট ছিলেন, তারা এলাকায় ফিরতে পারছেন না ভয়ে। সে জন্য যোগাযোগ কম হচ্ছে। আমরা পোলিং এজেন্ট, সাংবাদিক, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সব জানার চেষ্টা করছি। শিগগির সব পাঠিয়ে দেব।’

গত ৩ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেওয়া হয় ধানের শীষের প্রার্থীদের। এতে প্রার্থীদের আটটি বিষয়ে ‘অনিয়মের’ তথ্য সংগ্রহ করে এক সপ্তাহের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন জানান, তাদের পাঁচজন প্রার্থীই নানা অডিও, ভিডিও ও স্থিরচিত্র মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করছেন। তথ্য সংগ্রহের পর নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে।

এবার রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপির প্রার্থীরা। রাজশাহী-১ আসনে আমিনুল হক, রাজশাহী-২ আসনে মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী-৩ আসনে শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী-৪ আসনে আবু হেনা ও রাজশাহী-৫ আসনে নজরুল ইসলাম ম-ল হেরেছেন। রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী ছিল না।

এই পাঁচটি আসনের মধ্যে একটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও চারটিতেই ভোটের ব্যবধান ছিল বিপুল। এর মধ্যে আমিনুল হক ৮৫ হাজার ৩৮১, মিজানুর রহমান মিনু ১২ হাজার ১৪৬, শফিকুল হক মিলন এক লাখ ৩০ হাজার ৫৮২, আবু হেনা এক লাখ ৭৬ হাজার ২৫৫ ও নজরুল ইসলাম এক লাখ ৫৮ হাজার ৬৮৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটে সারা দেশেই ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির। নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত হিসাবে মাত্র সাড়ে ১৩ শতাংশ ভোট আর আটটি আসন পেয়েছে তারা। এককালের শক্তিশালী দুর্গ রাজশাহীতেও সুবিধা করতে পারেননি ধানের শীষের প্রার্থীরা। তবে বিএনপির অভিযোগ, কারচুপি করে হারানো হয়েছে তাদের।

রাজশাহী-৩ আসনের ভোটের ‘অনিয়মের’ প্রতিবেদন প্রায় চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন বিএনপির পরাজিত প্রার্থী মিলন। তবে এতে ভোটের দিন মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সহিংসতায় নিহত মেরাজুল ইসলামকে ধানের শীষের সমর্থক ধরা হয়েছে। যদিও তার গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। আর তিনি নিহত হয়েছেন বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই আসনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী বলেন, ‘মেরাজুলের ভাই হুমায়ন আওয়ামী লীগের কর্মী হলেও তিনি বিএনপির সমর্থক। তিনি ধানের শীষের প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন, যার তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এ ছাড়া ওই কেন্দ্রে সহিংসতার সময় একটি লাল গাড়ি থেকে গুলি ছোড়ার তথ্য-প্রমাণও আমরা পেয়েছি। সেগুলো প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া হবে।’