উড়ালসড়কে গাছের জন্ম!

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৪

সৈয়দ ঋয়াদ

মগবাজার উড়ালসড়কের বিভাজক আর এক পাশের দেয়ালে জন্ম নিয়েছে গাছের চারা। এই স্থাপনাটি রক্ষণাবেক্ষণে নগর কর্তৃপক্ষ কতটা আন্তরিকভাবে কাজ করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এরই মধ্যে।

প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, রাজারবাগ এলাকার যানজট নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। তবে স্থাপনাটি যে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে, তার প্রমাণ হলো, এটি থেকে চুরি হয়ে গেছে বিদ্যুতের তার। আবার নিয়মিত পরিচ্ছন্নতার অভাবে উড়ালসড়কের পাশে পানি নেমে যেতে যেসব ছিদ্র করা হয়েছে, সেগুলোর একটি বড় অংশই বন্ধ হয়ে গেছে বালু আর পুরনো কাপড়ে।

মগবাজার মোড়ের ওপর অংশ থেকে হলি ফ্যামিলির দিকের অংশে হাঁটার পথে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি পানি নেমে যাওয়ার ছিদ্র ভরাট হয়ে আছে। আর গত বর্ষায় উড়ালসড়কের ওপর যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, তার কারণও এটিই।

মৌচাক-মগবাজার দীর্ঘ চার লেনের এই উড়ালসড়কের ওঠানামা করার ১৫ স্থানেই কম-বেশি জমে থাকা ধুলোবালি চোখে পড়বে। আর ওপরের সড়কে কোথাও কোথাও ঘাস ও গাছের জন্ম হয়েছে। সেগুলো বেশ বড়ও হয়ে যাচ্ছে।

গত অক্টোবরের শেষে নভেম্বরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে থাকা এই উড়ালসড়কের দেখভালের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে। একাংশ পড়েছে উত্তরে এবং একাংশ দক্ষিণে।

মৌচাক মার্কেটের এক দোকান মালিক আবদুর রহিম মিয়া বলেন, ‘ফ্লাইওভারের ধুলোবালির কারণে দোকানে সমস্যা হয়। গত এক বছরেও কেউ পরিষ্কার করেনি আর পরিষ্কার করবে বলে মনে হয় না।’

অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘উড়ালসড়ক কোথাও অপরিচ্ছন্ন আছে আমি শুনিনি। তবে উড়ালসড়কের দায়িত্ব গ্রহণের সময় এর বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থার ত্রুটির কথা আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু সেসব বিষয় এখনো পুরোপুরি সুরাহা হয়নি।’

পরিস্থিতি জানালে ওই কর্মকর্তা বলেন, উড়ালসড়কের বিশেষ সরঞ্জাম ছাড়া হেঁটে এটি পরিষ্কার করা ঝুঁকিপূর্ণ।
‘এটা দেখভালের মতো আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। এত বড় ফ্লাইওভার পরিষ্কার করার মতো সরঞ্জামাদিও নেই। আমরা মন্ত্রণালয়ে মেকানিক্যাল রোড সুইপার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির জন্য কাগজপত্র পাঠিয়েছি।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘উড়ালসড়কের যে অংশটি উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়েছে, আমরা মেকানিক্যাল রোড সুইপার দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করছি।’

ইস্কাটন থেকে মগবাজারে উড়ালসড়কে ওঠার পথে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার জানামতো এই রাস্তাগুলো পরিষ্কার থাকার কথা। তবে অপরিচ্ছন্ন থাকলে সকালের মধ্যেই এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জনাব রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই ঢাকা উত্তরের তত্ত্বাবধানে থাকা কিছু অংশের আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়।