পোশাক খাত

পর্যালোচনায় বেতন বেড়েছে ১৫ থেকে ৭৮৬ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:০৯ | প্রকাশিত : ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:০১
ফাইল ছবি

পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করে সপ্তম গ্রেড ছাড়া বাকিগুলোতে বেতন কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। তবে এই পরিমাণটা উল্লেখযোগ্য নয়। সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫.৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে মালিক, শ্রমিক এবং সরকারের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে।

ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া নতুন বেতন কাঠামোকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে গত সপ্তাহের শুরু থেকে লাগাতার আন্দোলনে পোশাক শ্রমিকরা। আর রাস্তায় নেমে তাদের আন্দোলনের কারণে প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। আশুলিয়ায় গুলিতে একজন শ্রমিকের মৃত্যুও হয়েছে।

আন্দোলনের মুখে গত ৮ জানুয়ারি বেতন কাঠামো পর্যালোচনায় কমিটি গঠন করা হয়। আর বৃহস্পতিবার প্রথম বৈঠকে তিনটি গ্রেডের বেতন কাঠামো নিয়ে ত্রুটি চিহ্নিত করে রবিবার আবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এর মধ্যেও অবশ্য শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল আর মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ হুঁশিয়ারি দিয়েছে আজ থেকে কাজে যোগ না দিলে বন্ধ হয়ে যাবে কারাখানা।

এর মধ্যে বিকালে সচিবালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বসে আবার। এই বৈঠক শেষে পর্যালোচনা করে নতুন বেতন কাঠামোতে কিছু পরিবর্তনের ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বলেন, ‘সংশোধিত এই কাঠামো গত ডিসেম্বর থেকেই কার্যকর ধরা হবে। ফেব্রুয়ারির বেতন থেকে তা সমন্বয় করা হবে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন পক্ষকেই যৌক্তিক পরিমাণে বেতন বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

যে পরিবর্তন এসেছে

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পোশাক শ্রমিকদের নতুন বেতন কাঠামোর সাতটি সাতটি গ্রেডের মধ্যে ছয়টিতেই বেতন বেড়েছে। তবে নূন্যতম বেতন আগেই মতোই আট হাজার টাকা রয়েছে। আর বেতন বেশি বেড়েছে প্রথম থেকে তৃতীয় গ্রেডে জ্যেষ্ঠ শ্রমিকদের।

# প্রথম গ্রেডের একজন কর্মী এখন থেকে সব মিলিয়ে ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা বেতন পাবেন। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডের মজুরি ছিল ১৩ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে নতুন মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ১৭ হাজার ৫১০ টাকা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পর্যালোচনা করার পর বেতন বেড়েছে ৭৪৭ টাকা। শতকরা হিসেবে এটি ৪.২ শতাংশ।

# দ্বিতীয় গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪১৬ টাকা। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডের বেতন ১০ হাজার ৯০০ টাকা এবং ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ১৪ হাজার ৬৩০ টাকা ছিল।

অর্থাৎ পর্যালোচনার পর এই গ্রেডে বেতন বেড়েছ ৭৮৬ টাকা, যা শতকরা হিসাবে ৫.৩ শতাংশ।

# তৃতীয় গ্রেডের সর্বমোট বেতন ঠিক হয়েছে ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা, যা ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে ৬ হাজার ৮০৫ টাকা এবং ২০১৮ সালের গেজেটে ৯ হাজার ৫৯০ টাকা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পর্যালোচনার পর এই গ্রেডে বেতন বেড়েছে ২৫৫ টাকা বা ২.৬ শতাংশ।

# চতুর্থ গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে এই গ্রেডের বেতন ৬ হাজার ৪২০ টাকা এবং ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা ৯ হাজার ২৪৫ টাকা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পর্যালোচনার পর এই গ্রেডে বেতন বেড়েছে ১০২ টাকা বা ১.১ শতাংশ।

# পঞ্চম গ্রেডে সর্বমোট বেতন ঠিক হয়েছে ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা, যা ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে ৬ হাজার ৪২ টাকা। ২০১৮ সালের গেজেটে ৮ হাজার ৮৫৫ টাকা করা হয়েছিল।

অর্থাৎ পর্যালোচনায় এই গ্রেডে বেতন বেড়েছে ২০ টাকা বা ০.২২ শতাংশ।

# ষষ্ঠ গ্রেডের সর্বমোট বেতন ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪২০ টাকা। ২০১৩ সালের বেতন কাঠামোতে তা ছিল ৫ হাজার ৬৭৮। আর ২০১৮ সালে মজুরি কাঠামোর গেজেটে তা করা হয়েছিল ৮ হাজার ৪০৫ টাকা করা হয়েছিল।

এই গ্রেডে পর্যালোচনায় বেতন বেড়েছে ১৫ টাকা বা ০.১৭ শতাংশ।

# আর সপ্তম গ্রেডের সর্বনিম্ন মজুরি সব মিলিয়ে ২০১৮ সালের গেজেটের মতই আট হাজার টাকা রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালের কাঠামোতে সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন ছিল ৫৩০০ টাকা।

এক প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, দুই একদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এর আগে শ্রম মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সীসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে গ্রেডগুলো সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/এমএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :