কুবিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের পিটুনিতে ছাত্র আহত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের সামনেই এক ছাত্রকে বেদম পিটিয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। ভুক্তভোগীকে এই বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেও নিষেধ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম ইংরেজি বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মূল ফটক সংলগ্ন স্থানে তাকে মারধর করা হয়।
দুপুরে দুই জনকে চায়ের দোকানে ঘটনার মীমাংসায় বসেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। এ সময় জাহিদুলকে লাঠি, রড ও চেয়ার দিয়ে পেটানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম দীপ্ত, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, উপ-প্রচার সম্পাদক আহমেদ আলী বুখারী, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক মুনতাসির আহমেদ হৃদয়, উপ-দপ্তর সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মিঠুন, সহ-সম্পাদক কাজল হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী সিফাতসহ কয়েকজন জাহিদুলকে পেটায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় জাহিদুলের সঙ্গে থাকা সহপাঠী খান জাহিদুল ইসলামও আহত হন।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা আহত জাহিদুল ইসলামের বক্তব্য শুনতে চাইলে তাকে কথা বলতে দেননি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ।
পরে মোবাইল ফোনে জাহিদুল বলেন, ‘শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মারধরের পর আমাকে নিয়ে বসেছিলেন। তারা সাংবাদিকদের সাথে আমাকে কথা না বলার জন্যও বলেন। কারণ পরবর্তীতে আমার কিছু ঘটলে কে দেখবে? সামনে আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা।’
ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী হাসান অভি বলেন, ‘আমি আমার মেয়ে বন্ধুর সঙ্গে হোটেলে বসেছিলাম। তিনি (জাহিদুল ইসলাম) আমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং আমাকে মারধর করেছেন।’
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘ছাত্রলীগের একটি ছেলের গায়ে হাত দেওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে বিষয়টি মীমাংসা করতে আমরা বসেছিলাম।’
মীমাংসা করতে বসে কীভাবে শিক্ষার্থী প্রহৃত হলেন- জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘ছেলেরা ক্ষেপেছিল, তাদের আমরা শান্ত করতে পারিনি।’
গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় মার্কেটিং বিভাগের জাহিদুল ইসলামকেও মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ঐ ঘটনারও কোনো বিচার হয়নি এখনও।
অভিযুক্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এর আগে একাধিকবার দলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর কাজী কামাল উদ্দিন জানান, ‘এই ঘটনা নিয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করে নাই। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
আগের ঘটনাগুলোর বিচার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কামাল উদ্দিন বলেন, ‘কালকে (আজ) ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে সমাধান করব।’