সংরক্ষিত আসনে আ.লীগের মনোনয়ন চান রুবামা নূর
রুবামা ইয়াসমিন নূর। স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক। পেশায় আইনজীবী। সৃজনশীল লেখালেখিতেও হাত আছে তার। শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন নূর। এবার একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান তিনি।
রুবামা নূর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগে সরকারি চাকুরে বাবা এ টি এম নূরুন্নবী পাকিস্তানের পতাকা দিয়ে জুতো মোছায় চাকরি হারান ও গ্রেপ্তার হন। পরে যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন হয়রানি মামলায় দফায় দফায় পশ্চিম পাকিস্তানের কারান্তরীণ ছিলেন। নূরের দাদা ও দুই চাচা ছিলেন যুদ্ধের মাঠে।
নূরের পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিল থানার সাত্রাপাড়া গ্রামে। ১৯৯২-৯৩ সালে স্কুলে পড়ার সময় থানা ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন তিনি। ১৯৯৪-৯৫ সালে চাটখিল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় বিএনপি বিরোধী আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন তিনি।
বাবা নূরুন্নবীও ছিলেন ছাত্রনেতা। তিনি ১৯৬৭-৬৮ সালে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ওই সময় উত্তরবঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণও ছিল তার। পরে তিনি নোয়াখালীর চৌমহনী কলেজে পড়ার সময় মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের সঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বাবার সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে রুবামা নূর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাবার আদর্শ। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করেছেন। ১৯৬৯ সালে আগরতলা মামলার বিচারকাজ চলাকালে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেন। পরে তিনি করাচির নিস্তারপার্কে ছয় দফা দাবি আদায়ে বঙ্গবন্ধুর জনসভাতেও যোদ দেন।’
নূর জানান, স্বাধীনতার পর পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭৩ সালে দেশে ফেরেন তার বাবা। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের দুর্দিনে আর সবার মতো তিনিও নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। জাসদের গণবাহিনীর রোষানলেও পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরিচিত একজনের বদান্যতায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। তারও বছর পাঁচেক পর কর্মজীবন শুরু করেন কৃষি ব্যাংকে। ১৯৮২ থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক কারণে দুঃসহ জীবন পার করেন। কিন্তু তারপরও আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে সরে যাননি। এখনো সক্রিয় আছেন। রুবামা ইয়াসমিন নূরের স্বামী ফখরুল ইসলাম কুসুমও ১৯৭৮-৭৯ সালে ছাত্রলীগের রমনা থানার প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হাশেম উদ্দিন হায়দার পাহাড়ী, আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) শওকত আলীর নেতৃত্বে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী রুবামা নূর বলেন, ‘আমি দলের মনোনয়ন চাইব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের এগিয়ে নিয়ে আসছেন। আমি একজন তরুণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর এই অগ্রযাত্রায় সহযাত্রী হয়ে কাজ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমার মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছি। নেত্রী আমার প্রতি আস্থা রাখলে দল ও মানুষের জন্য আমি কাজ করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’ আজ থেকে আওয়ামী লীগ সংসদের সংরক্ষিত আসনের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করবে। সরাসরি ভোটে পাওয়া আসনের আনুপাতিক হারে আওয়ামী লীগ এবার ৪৩টি পদ পাবে।
ঢাকাটাইমস/১৪জানুয়ারি/ইএস