হাতুড়িপেটার শিকার তরিকুল এখনো বিছানায়

সিরাজুম সালেকীন
 | প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫০

প্রতিবাদে নেমে ছাত্রলীগের হাতুড়িপেটার শিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলামকে তিন দফা চিকিৎসকের ছুরি-কাঁচির নিচে যেতে হয়েছে। কিন্তু এখনো সুস্থ হননি। পড়ে থাকেন বিছানায়। পড়াশোনা শেষ হলেও চাকরি খোঁজা বা চাকরির জন্য পড়ার মতো সুস্থও হতে পারেননি।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল তা করতে সাহস পাননি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সহায়তা করেনি। তারা চিকিৎসার জন্যও তরিকুলের পাশে দাঁড়ায়নি। তাকে হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি পর্যন্ত দেয়নি প্রশাসন।

তবে বাইরের অনেকে তার চিকিৎসা-সহায়তা করছে বলে জানান তারা।

ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতাদের পিটুনির প্রতিবাদে গত বছরের ২ জুলাই মাঠে নেমেছিলেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজের (ফিকাহ) শিক্ষার্থী তরিকুল। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তায় ঘিরে ধরে পেটায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তখন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, আক্রমণকারীদের একজন লোহার হাতুড়ি দিয়ে তরিকুলের পিঠে ও পায়ে আঘাত করে। এ ঘটনার অনেক সমালোচনা হয় মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

আহত তরিকুলকে গত বছরের ৯ জুলাই, ২২ জুলাই ও এই বছরের ১২ জানুয়ারি অপারেশন করা হয়। এখন তার দিন কাটে বিছানায় শুয়ে। শরীরের জখম ও ব্যথা নিয়েই দিয়েছেন স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা। এ নিয়ে তরিকুলের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে মেডিকেলে পরীক্ষার অনুমতি চাইলেও তিনি তা পাননি। পরে শিক্ষকদের অফিস কক্ষে মেঝেতে বসে পরীক্ষা দিতে হয় তাকে।

শরীরের উন্নতি হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তরিকুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সর্বশেষ অপারেশনের পর এখনো রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আছি। এবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে সময় লাগবে। যেখানে অপারেশন করা হয়েছিল সেখানে ইনফেকশন হয়েছিল। মেরুদণ্ডেও বড় ধরনের আঘাত লেগেছিল। এটা নিয়েও ভুগতে হচ্ছে। আর পায়ের সমস্যা তো আছেই।’

তরিকুলের সহপাঠীদের কেউ কেউ চাকরিতে ঢুকেছেন। কেউবা চাকরির জন্য পুরোদমে পড়াশোনা করছেন। কিন্তু তরিকুল কিছুই করতে পারছেন না। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে যেখানে চাকরিতে ঢোকার কথা, সেখানে ঠিকমতো হাঁটতেই পারছি না। চাকরির জন্য যে পড়াশোনার দরকার তা-ও করতে পারছি না। দিনে দুই ঘণ্টা পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু শরীর সেই সাপোর্ট দিতে পারে না।’

তরিকুলের চিকিৎসা-খরচ চলছে বিভিন্নজনের সহায়তায়। তিনি বলেন, ‘তিনটা অপারেশন ও ওষুধ মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। পরিবার আর টানতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার দিকে ফিরেও তাকায়নি।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :