বিজয় উৎসবে এক খণ্ড ‘একাত্তর’

কাজী রফিক
 | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:৩৫

সোহরাওয়ার্দীতে বিজয় উৎসবে নানা সাজে হাজির হওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বেশ কয়েকজন এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধার রূপ ধারণ করে। যুদ্ধসাজে থাকা এদের হাতে ছিল মেশিন গান, রাইফেল, মর্টারের নমুনাও।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জয় পাওয়ার ১৯ দিন পর গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘বিজয় উৎসব’ করে আওয়ামী লীগ। আর এ সময় ৪৮ বছর আগের মুক্তিযুদ্ধও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা দেখা যায়।

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের জমায়েত মানেই একাত্তরের সেই গর্বের বর্ণিল উপস্থাপনা। নানা সাজে, নানা ঢঙে নেতা-কর্মীরা বরাবর ফুটিয়ে তোলেন যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি। এদের একজন আবার অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন ১৯৭১ সাল

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আবেগ-ভালোবাসার টান স্পষ্ট। তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে কেউ একা কেউ দল বেঁধে ছবি তুলেছেন।

কিশোর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মো. ইলিয়াস রণাঙ্গনের বীরযোদ্ধা। তিনি চার যুগ আগের রূপ ধারণা করে এসেছিলেন বিজয় উদযাপনে। সঙ্গে এসেছিলেন আরিফ ও সামসু নামে দুই জন। তারা মুক্তিযোদ্ধা না হলেও ইলিয়াসের মতোই সেজে আসেন।

ইলিয়াস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখে নাই তাদের জন্য সেজেছি। সবাই জানুক, যুদ্ধের সময় আমরা কি করেছি, কেমন ছিলাম।’

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়ের উৎসব বলে দলের প্রতীক নৌকার ছড়াছড়িও ছিল লক্ষ্যণীয়। কারো হাতে কাগজের নৌকা, কারো মাথায় নৌকার প্রতীক, কেউ বা সত্যিকারের নৌকা নিয়ে এসেছেন ভ্যানে করে। একজনকে আবার দেখা যায়, গাছকে নৌকার মতো করে বেঁধে এনেছেন।

বিকাল নাগাদ জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া গোটা এলাকায় হয়ে উঠে নৌকাময়। সেই সঙ্গে চলছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হওয়া জনপ্রিয় নানা গান। প্রচার হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গাওয়া নানা গানও। আর ছিল মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।

কিছু মানুষের বেশভূষা এতটাই ভিন্ন ছিল যে, জনসমুদ্রের মাঝেও তাদের দিকে দৃষ্টি পরেছে সবার। তাদের একজন মো. নূর ইসলাম। বয়স ৮৪ বছর। জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ভালবাসা, বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করতে তিনি এখানে এসেছেন।

নূর ইসলামের দিকে সকলের দৃষ্টি পরার কারণ তিনি রণপা নিয়ে হাঁটেন। রণপা সকলে আকর্ষণ করার পাশাপাশি এই বয়সে কষ্টের বিষয়টিও সকলের নজর কারে। বিজয় সমাবেশে দূর থেকেই সকলের নজর পরে তার দিকে। বেশ কষ্ট করে চলছেন তিনি। তবুও ক্লান্তি নেই।

বলেন, ‘বয়স হইছে। ভালবাসা তো কমে নাই। আমি নদী ভাঙা মানুষ। থাকার জায়গা নাই। কিন্তু দেশ তো আছে। একদিন তো এইডাও ছিল না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়েল চত্বর, রাজু ভাস্কর্য, শাহবাগ এলাকাসহ সব জায়গায় ছিল উৎসবের আমেজ। শাহবাগ জাদুঘরের সামনে উন্মুক্ত গানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী সংস্কৃতিক ফোরাম।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাহিরে যেমন উৎসব দেখা গেছে একই রকম উৎসব দেখা গেছে উদ্যানের ভেতরেও। উদ্যানের প্রবেশ করা দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিজয় উৎসবকে আরো মনোরম করে তুলতে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন সালমা, মমতাজ, জলের গান সহ দেশের খ্যাত নামা সঙ্গীত শিল্পীরা। এসময় তারা একে একে সঙ্গীত পরিবেশ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :