মেঘনায় ট্রলারডুবি

নদী তীরে স্বজনদের মাতম

আরাফাত রায়হান সাকিব
 | প্রকাশিত : ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ২০:১৫

মুন্সিগঞ্জের মেঘনায় ডুবে যাওয়া ট্রলার শনাক্ত করতে হয়নি পাঁচ দিনেও। স্বজনরা উৎকণ্ঠিত, নিখোঁজ ২০ জনের পরিণতি কী হয়েছে, সেটা নিয়ে শঙ্কা মনে। তবু আশা, হয়ত কেউ জীবিত ফিরবেন। সাঁতরে হয়ত কেউ তীরে উঠতে পেরেছেন।

তবে পাঁচ দিনেও এমন কারো খোঁজ মেলেনি। যাদের সলিল সমাধি হয়েছে, তাদের দেহটা পেলেও নিজেরা সমাহিত করে শান্তনা পেতে চান।

প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি নদী তীরে উদ্ধার অভিযানকে ঘিরে থাকে স্বজনদের ভিড়। কান্নার রোল অবশ্য এখন কিছুটা কমে এসেছে। আবেগও এক সময় স্থিমিত হয়ে যায়।

তবে শান্তনা পাওয়ার মতো কিছু ঘটেনি শনিবারও। পঞ্চম দিনের অভিযানেও ডুবে যাওয়া ট্রলার ও বা নিখোঁজ ২০ শ্রমিকের সন্ধান মেলেনি।

শনিবার গজারিয়া উপজেলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে নৌবাহিনীর ডুবরি দল, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিআইডাব্লিউটিএর সদস্যরা। রবিবার থেকে চাঁদপুর অংশে উদ্ধার অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা।

শনিবার সকাল থেকে শুরু করা হয় উদ্ধার কাজ। নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিআইডাব্লিউটিএ সদস্যরা উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় দিয়ে রশি বেঁধে র‌্যাক টেনে খোঁজ চলে নদীর তলদেশে।

নৌযান শনাক্তকারী বিশেষ জাহাজ অগ্নিশাসক ও দূরন্ত ছিল উদ্ধার অভিযানে। একই স্থানে নৌবাহীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সাইড স্ক্যানার মাধ্যমে ট্রলারটির অবস্থান শনাক্তের চেষ্টাও চালানো হয়। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দলও নদীতে খোঁজ চালায়।

বিআউডাব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, ডুবে যাওয়া ট্রলারটি যদি নদীর তলদেশের কোন গর্তে পরে থাকে সেক্ষেত্রে ট্রলার উপর বালির গভীর আস্তর পরে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্রলারের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া দুষ্কর হবে।

শুক্রবার রাতে গজারিয়া থানায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের মালিক জাকির দেওয়ান, সারেং হাবিব ও দুর্ঘটনায় জড়িত তেলের ট্যাংকারের চালককে আসামি করে মামলা করেছে দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী শাহ আলম।

ডুবে যাওয়া ট্রলারটি শনাক্ত না হওয়ায় গঠিত ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজও শুরু করতে পারেনি। গত সোমবার ভোর রাত তিনটায় চাঁদপুরের মতলব উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা সীমান্তবর্তী কালিপুরা এলাকা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্যাংকারের ধাক্কায় ৩৪ শ্রমিক নিয়ে ডুবে যায় মাটি বোঝাই ট্রলারটি। শ্রমিকদের মধ্যে ১৪ জন সাতঁরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ রয়েছে ২০ শ্রমিক।

তীরে উঠা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে গজারিয়া নৌপুলিশ জানায়, মাটি নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দিকে যাচ্ছিল ট্রলারটি। নিখোঁজ ২০ জনের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় মিলেছে। তাদের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :