গুলিস্তান-মতিঝিলের ফুটপাত আবার হকারের দখলে

এম গোলাম মোস্তফা
 | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৫

রাজধানীর পল্টন মোড়ে দাঁড়িয়ে রাস্তার দক্ষিণ পাশে দূর থেকে মনে হয় পলিথিনের তাঁবু। একটু এগিয়ে দেখা যায়, পুরো ফুটপাতের দুই পাশে হকাররা পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। মাঝখানে দেড়-দুই ফুট ফাঁকা, তাতে ক্রেতাদের ভিড়। এই অবস্থায় পথচারীদের চলাচলের অবস্থা নেই। মূল সড়ক ধরে চলতে গিয়ে যানজটের পাশাপাশি নানা দুর্ঘটনার শঙ্কা।

পল্টনের পাশাপাশি বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান, মতিঝিল এলাকায় রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতে ছোট ছোট চৌকিতে সাজানো পসরা। এসব চৌকিতে বিক্রি হচ্ছে নানা পণ্য। ফুটপাত দখল করে মূল রাস্তায় নেমেছেন হকাররা। এর মধ্য দিয়ে কোনো রকমে এঁকেবেঁকে চলছেন পথচারীরা।

পথচারীদের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে নানা চেষ্টা ও উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে একাধিকবার। গত দুই বছরে বারবার চালানো হয়েছে অভিযান। এর মধ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে চালানো হয় সবচেয়ে বেশি আলোচিত উচ্ছেদ অভিযান। তখন সিদ্ধান্ত হয়, হকাররা কেবল শুক্র ও শুনিবার দিনভর আর কর্মদিবসে অফিস ছুটির পর কিছু এলাকায় বসবেন।

প্রথম প্রথম কড়াকড়ি থাকায় পথচারীরা স্বচ্ছন্দে পথ চলতে পারছিল। কিন্তু অতীতের নানা সময়ে যা ঘটেছে, এবারও তাই হয়েছে। ধীরে ধীরে আলগা হয়েছে বাঁধন। ফুটপাতে পথচারী হয়েছে অপাঙ্ক্তেয়, আর আসন গেড়েছেন হকাররা।

গতকাল মতিঝিল, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা, বায়তুল মোকাররম, পল্টন, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, বাবুবাজার, ফুলবাড়িয়া, ফকিরাপুল এলাকার রাস্তায় ফুটপাত দখল করে হকারদের পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ফুটপাত ও রাস্তার কিছু অংশ হকারদের দখলে থাকায় রাস্তায় গাড়িও চলছে থেমে থেমে। এতে যানজটে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

কথা হয় গুলিস্তান ফুটপাতে কাপড় ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেনের সঙ্গে। ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘১৯৯৫ সাল থেকে গুলিস্তানের ফুটপাতে ব্যবসা করে আসছি। নানা সময়ে নানা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। এসব এখন সয়ে গেছে। এখানে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা। চৌকি বিছাতে পারলেই পেট চলে, না পারলে না খেয়ে মরতে হবে। এই যে দেখছেন চৌকিগুলো, বিক্রি হোক আর না হোক, চৌকি বিছালেই ৫০০ টাকা চাঁদা গুনতে হয়।’

উচ্ছেদ করার পর আবার কেন ফুটপাত দখল হচ্ছে জানতে চাইলে হকার্স সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক আবুল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের পুনর্বাসন না করা পর্যন্ত আমারা কী করে চলব? হকারদের বারবার উচ্ছেদ করার আগে পুনর্বাসনের সঠিক সমাধান করা উচিত। কারণ পুনর্বাসনের সমাধান ছাড়া হকাররা মানবেতর জীবন যাপন করেছে। একদিকে ফুটপাতে বসলে অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, অন্যদিকে এত দিন অতিবাহিত হলেও হকার পুনর্বাসনের কোনো স্থায়ী সমাধানও হচ্ছে না।’

আবাুল হোসেন বলেন, ‘আমরা ছাড়তে চই, ফুটপাত দখল করতে চাই না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয় না। উচ্ছেদ কোনো সমাধান নয়, বরং আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা নিতে হবে। ভাঙচুর করে কোনো সমাধান হয় না, মানবিক বিপর্যয় হয়। কিছু মানুষ সর্বহারায় পরিণত হয়। একটি জাতীয় সংলাপ করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সমাধান না হলে ফুটপাত এই অবস্থায় থাকবে, আমরা এটা চাই না। জবরদস্তিভাবে উচ্ছেদ করা হলে মানুষ মারা যাবে। হবে বিপর্যয়।’

জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে আমাদের মোবাইল কোর্ট চলমান আছে। আবার উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা হবে, যাতে করে তাদের একটি পেরেশানি তৈরি হয়। পথচারীদের ফুটপাত দখলমুক্ত করা আমাদের অঙ্গীকার, জনস্বার্থেই আমরা ফুটপাত দখলমুক্ত করব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মেয়র তাপসের মতবিনিময়

মতিঝিলের ফুটপাতে পড়েছিল বৃদ্ধার মরদেহ

মিরপুর বিআরটিএ’তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৪ দালালকে সাজা

খিলক্ষেতে ৬০ কোটি টাকার খাসজমি উদ্ধার

রাজারবাগের পুকুরে ডুবে পুলিশ সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু, ধরা পড়ল সিসি ক্যামেরায়

চার নারী একসঙ্গে ওয়াশরুমে! সেই রাতে গুলশানে কী হয়েছিল, জানালেন ভুক্তভোগী

রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নারীর আত্মহত্যা

সংসদ এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে আটক সাবেক এমপিপুত্র, ছাড়া পেলেন মুচলেকায়

গুলশানে ‘মাতাল’ হয়ে মারামারিতে জড়ানো তিন তরুণী গ্রেপ্তার, বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: মা ও স্ত্রীর পর না ফেরার দেশে লিটনও

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :