‘গাপ্পি’ পরীক্ষায় তবুও সাফল্যের ‘গপ্পো’

রেজা করিম
 | প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:৩৩

গাপ্পি মাছের সঙ্গে ঢাকাবাসীর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। তখনই প্রথম মশক নিধনে রাজধানীর নর্দমায় (ড্রেনে) ছাড়া হয় গাপ্পি মাছ। দীর্ঘদিন পর একই উদ্যোগ আবার সামনে নিয়ে আসেন মেয়র হানিফের পুত্র ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে পুরান ঢাকার নর্দমায় ১০ হাজার গাপ্পি মাছ অবমুক্ত করেন তিনি। তারপর আর বিষয়টি নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। নতুন কোনো উদ্যোগও দেখা যায়নি।

তবে ডিএসসিসি থেকে দাবি করা হচ্ছে, গাপ্পির মাধ্যমে মশক নিধনের উদ্যোগ সফল ছিল। কিন্তু নতুন করে ছাড়া হয়নি কেন, তার সদুত্তর দিতে পারছে না তারা। তাই গাপ্পির সাফল্য ‘গপ্পো’ মনে করছে অনেকেই।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের শেষ দিকে এসে ‘গাপ্পি’ দিয়ে মশক নিধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা বাস্তব রূপ পায় ২০১৮ সালে। গত বছরের ২০ মার্চ অঞ্চল-৪-এর কাজী আলাউদ্দিন রোডের বেশ কয়েকটি নর্দমায় ১০ হাজার গাপ্পি মাছ অবমুক্ত করেন ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন। ওই এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে আরও কিছু নর্দমায় ছাড়া হয় গাপ্পি। তখন বলা হয়েছিল, ডিএসসিসির ৪৫০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন নর্দমায় ১৫ লাখ গাপ্পি মাছ ছাড়া হবে।

গাপ্পি অবমুক্ত করে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেছিলেন, ‘প্রথমে গাপ্পি মাছের ফল পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইতিবাচক ফল মিললে করপোরেশনের অধীন সব এলাকাতেই এই কার্যক্রম চালানো হবে।’ এই প্রকল্প শুধু কিউলেক্স মশা নিধনের জন্য, এডিশ মশার জন্য নয়Ñএ কথাও তখন জানিয়ে রাখেন তিনি।

ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা যায়, গত বছরের মার্চে গাপ্পি অবমুক্ত করার পর এর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। দু-তিন সপ্তাহে দেখা যায়, গাপ্পি ড্রেনের মশক ও লার্ভা ধ্বংসে বেশ ভালো কাজ দিয়েছে। তবে পরে দেড় মাসের মাথায় বৃষ্টি শুরু হলে সব ভেস্তে যায়। ¯্রােতে ভেসে যায় গাপ্পি। পানির প্রবাহ বন্ধ করে অনেক ড্রেনে সংস্কারকাজে আবার পানি শুকিয়ে মরেও গেছে। বর্তমানে ড্রেনগুলোতে আর গাপ্পি চোখে পড়ছে না। ভালো কাজ দিলেও বৃষ্টিসহ কিছু সমস্যার কারণে এটাকে স্থায়ী সমাধান হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

পরীক্ষায় সাফল্য এলেও গাপ্পি নিয়ে উদ্যোগ নেই কেন, জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-৪-এর নির্বাহী কর্মকর্তা উদয়ন দেওয়ান ঢাকা টাইমসকে জানান, গাপ্পি মাছ ছাড়ার সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তাই এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

এ বিষয়ে অঞ্চল-৪-এর চিকিৎসক (স্বাস্থ্য বিভাগ) ড. শামসুল কবির ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কাজী আলাউদ্দিন রোডের কয়েকটি ড্রেনে গাপ্পি ছাড়া হয়েছিল। ভালোই কাজ দিচ্ছিল। তবে সর্বশেষ অবস্থাটা আমাকে জেনে বলতে হবে।’

মশক নিধনের এ উদ্যোগ সম্পর্কে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাহউদ্দিন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কিউলেক্স মশা নিধনে পরীক্ষামূলকভাবে এ মাছ ছাড়া হয়েছিল। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে এ কার্যক্রম স্থায়ী করার সুযোগ নেই। যে কারণে এটাকে মশক নিধনের অস্থায়ী কার্যক্রম হিসেবে বিবেচনা করছি আমরা।’

এই উদ্যোগ কি বন্ধই হয়ে গেল এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেহেতু মশক নিধনে গাপ্পি ভালো কাজ দেয়, তাই সময়-সুযোগ বিবেচনায় আবারও গাপ্পি ছাড়া হতে পারে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :