আল্লাহর নৈকট্য লাভের উৎসব ঈদুল আজহা

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৯:৩১ | আপডেট: ০৫ মে ২০১৭, ১৮:২২

অনলাইন ডেস্ক

প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নযোগে আল্লার কাছ থেকে আদিষ্ট হন তার প্রিয়তম বস্ত উৎসর্গ করার জন্য। হজরত ইব্রাহিমের কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন ছোট ছেলে ইসমাইল। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রিয় পুত্রকে কোরবানি দিতে উদ্যত হন তিনি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হজরত ইব্রাহিমের ত্যাগের সদিচ্ছায় সন্তুষ্ট হয়ে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি কবুল করেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা এমনই ত্যাগের মহিমা ঘোষণার উৎসব। আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উৎসব। এদিন পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মনের নীচতা-অহংকার বর্জনেরও বার্তা ঘোষিত হয়।

কিন্তু অনেক সময় আমরা কোরবানির পশু কেনার বেলায় দামের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হই। কে কার চেয়ে বড় ও বেশি দামে পশু কিনেছি তা প্রকাশের প্রবণতা কোরবানির মূল্য উদ্দেশ্যকে নষ্ট করে। তাই আমাদের কোরবানির উদ্দেশ্য যেন লোক দেখানো না হয়। আসমানি কিতাব আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না এগুলোর গোশত ও রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।' (সূরা আল-হজ, আয়াত-৩৭)

ত্যাগ ও উৎসর্গের শুদ্ধ নিয়তের পাশাপাশি কোরবানির মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রে শরিয়ত নির্দেশিত নিয়মও আমাদের মেনে চলতে হবে। কোরবানির মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ প্রতিবেশী-আত্মীয়স্বজনের জন্য, এক ভাগ দরিদ্রদের জন্য এবং এক ভাগ নিজের জন্য রাখা- এই হলো বিধান। আমরা যেন এটি পরিপালন করি।

কোরবানির পর একটি বিষয় বিড়ম্বনার কারণ হয় মানুষের জন্য। যেখানে-সেখানে পশু জবাই ও কাটাকুটির কারণে পরিবেশের দূষণ ঘটে। অনেকে পশুর রক্ত ও বর্জ পরিষ্কার না করে ফেলে রাখেন বলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে দুর্বিষহ করে তোলে আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা। এদিকে আমাদের সচেতন হতে হবে। সিটি করপোরেশনের আশায় বসে না থেকে নিজেরাই পরিষ্কার করে নেব পশু জবাইয়ের স্থানটুকু।

আবার সিটি করপোরেশনও নাগরিকের ওপর সব ছেড়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। যত দ্রুত সম্ভব পশুর হাট ও পাড়া-মহল্লা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ সরিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকতে হবে নাগরিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটিকে।

বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আশার কথা আমাদের দেশেও এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কোরবানির পশু কোরবানির জন্য, যেখানে হালালভাবে পশু জবাইয়ের জন্য থাকবেন মৌলানা, কাটাকুটির জন্য থাকবেন কসাই। গত বছর এ উদ্যোগের প্রতি জনগণের খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। জনগণের অংশগ্রহণের অভাবে ভালো একটি উদ্যোগ ব্যর্থ হলে সেটা হবে হতাশার ব্যাপার। আমরা আশা করি, পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসবেন সবাই।

ত্যাগ ও উৎসর্গের মধ্য দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহায় ঢাকাটাইমসের

পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই শুভেচ্ছা।