সাভারে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবদল নেতা নিহত

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০১৬, ০৯:০৮ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:১৩

সাভার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সাভারে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন হত্যাসহ একাধিক মামলা আসামি পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম নয়ন। নিহতের স্বজনদের দাবি, নয়ন বিএনপি করেন এবং পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় বন্দুকযুদ্ধের নাম করে তাকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। নিহত নয়ন সাভার পৌর এলাকার মালঞ্চ মহল্লার শহিদুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশের দাবি, সাভার মডেল থানায় মাদক, অস্ত্র ও ডাকাতি মামলাসহ ডজনখানেক মামলার আসামি শাহ আলম নয়নকে শুক্রবার ভোররাতে মোহাম্মদপুর থেকে আটক করা হয়। এরপর সাভার মডেল থানা পুলিশ তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে বের হয়। ভোররাতে বিরুলিয়া ইউনিয়নের কৃষিবিদ নামক এলাকায় পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। এসময় নয়ন সুযোগ বুঝে পালানোর চেষ্টা চালান। পরে পুলিশ পেছন থেকে গুলি ছুড়লে নয়ন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং এ ব্যাপারে বিস্তারিত বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে অবগত করবেন বলে জানান। এরপর একাধিকবার সাভার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম মনির ও সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের যোগাযোগ করা হলে কাউকে পাওয়া যায়নি। বেলা ১টা পর্যন্ত তারা কোনো প্রেস বিফ্রিংও করেননি।

নিহত শাহ আলম নয়নের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে নিহত নয়নের শ্যালক সম্রাট আহম্মেদ পারভেজ দাবি করেন, গত বৃহস্পতিবার তার বোনজামাই সাভার থেকে মোহাম্মদপুরে তাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। দিনগত ভোররাতে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় ও আহসান তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে নয়নকে ধরে নিয়ে যান। এসময় এসআই তন্ময় বাসায় থাকা নগদ ছয় লাখ টাকা ছয় ভরি স্বার্ণালংকার লুট করে নিয়ে যান বলেও দাবি সম্রাটের।

সম্রাট আরও দাবি করেন, পরে শুক্রবার সকালে ওই এসআই তার বাবাকে ফোন করে আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা পেলে তিনি তার মেয়ের জামাইকে ছেড়ে দেবেন বলে জানান। এসআই তন্ময়ের কথা অনুযায়ী আড়াই লাখ টাকা দেয়া হলেও পুলিশ তাকে না ছেড়ে আরও দশ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় সম্রাট ও নয়নের পরিবারের লোকজন সাভার থানায় গেলে পুলিশ এই নামে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করেনি বলে তাদের জানায়। তবে রাত ৯টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে নয়নকে কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে সাভার মডেল থানা থেকে বাইরে নিয়ে যেতে দেখা যায় বলেও জানান সম্রাট। শনিবার ভোরে বন্দুকযুদ্ধে নয়ন মারা গেছেন বলে তারা জানতে পারেন।

তাদের দাবি, নয়ন বিএনপি করেন এবং পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় বন্দুকযুদ্ধের নাম করে পুলিশ তাকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে।

নিহত শাহ আলম নয়ন ২০০৩-২০০৫ বিএনপি সরকারের আমলে সাভার পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেই সময় নয়ন পাকিজা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে অংশ নেয়ার সময় অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে আটক হন। সেই মামলায় ১০ বছর সাজা ভোগ করার পর গত দুই বছর আগে তিনি মুক্ত হন।

(ঢাকাটাইমস/০১অক্টোবর/প্রতিনিধি/জেবি)