ময়মনসিংহে পাম অয়েল চাষে সাফল্য

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০১৬, ১১:০১ | আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬, ১১:২৯

মনোনেশ দাস, ঢাকাটাইমস

 

ময়মনসিংহে মুক্তাগাছায় ও ভালুকায় অর্থকরী ফসল পাম অয়েলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাগানগুলোতে শোভা পাচ্ছে পাম গাছের দীর্ঘ সারি।

ভালুকায় ১৬ বছর আগে রাজৈ ইউনিয়নের কুল্লাব গ্রামের আনোয়ার ইসলাম (ফকির)। ১০ একর জমিতে ২ হাজার পাম গাছের চারা রোপণ করেন। কোটি টাকা ব্যয়ে গড়া এই বাগের গাছগুলোতে এখন থোকায় থোকায় ফল।

মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্লা গ্রামের রিয়াজুল করিম  ৮ বছর আগে পুকুর ও ফসলি জমির আইলে ১০ শতাংশ জমিতে ৪০টিরও অধিক পাম গাছের চারা রোপন করেন। রোপিত গাছের ২০টিরও অধিক গাছে এখন কাঁদিতে কাঁদিতে পরিপক্ক ফল।  

দুই বছর ধরে তাদের বাগানে উৎপাদিত পাম ফল থেকে উৎপাদিত বিশুদ্ধ পাম তেল।

এই দুই কৃষক জানান, উৎপাদিত তেল বিদেশ থেকে আমদানি করা তেলের চেয়ে বহুগুণে ও মানে উন্নত এবং সুস্বাদু।

মো. আনোয়ার ইসলাম জানান, বাগানে ২০ টনেরও অধিক ফল আহরণ করা হচ্ছে। এ ফল পরিশোধনের মাধ্যমে ১০ টনেরও অধিক পাম অয়েল পাওয়া যায়।

কেজিপ্রতি ২৫ টাকা দরে ৫০ লাখ টাকায় কিনে নিচ্ছে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন ফার্মের মালিকরা।

ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এই অঞ্চল পাম চাষবান্ধব। পরিসর বাড়ানো হলে পাম তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে। ব্যাপকভাবে পাম চাষ করা গেলে বিদেশ থেকে পাম তৈল আমদানি করার প্রয়োজন হবে না।

বাংলাদেশ পামওয়েল উন্নয়ন প্রকল্প ও পামওয়েল রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লি. সূত্রে জানা যায়, এটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। টানা ৬০-৭০ বছর ফল দেয়। ঝড় জলোচ্ছাসে গাছের ক্ষতি হয় না। অন্যান্য গাছ থেকে ১০ গুণ বেশি অক্সিজেন দেয়। ১ একর পামওয়েল চাষে ঘরে বসেই মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।

প্রতি গাছে মাসে ১ হাজার টাকা আয় হয়। একটি পরিবারের সারাবছরের তেলের চাহিদা পূরণের জন্য ২টি গাছই যথেষ্ট। ২০ ফুট দূরত্বে ২ ফুট বাই ২ ফুট গর্ত করে মাটির সাথে ৫/৭ কেজি গোবর, ১শ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম এমওপি মিশিয়ে চারা রোপন করতে হয়। ফল থেকে হাতে ও মেশিনে তেল সংগ্রহ করা হয়। ফল পানিতে সিদ্ধ করে চিপন দিলে তেল বের হয়। টঙ্গী মাজুখানে ইতোমধ্যে মিল স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সারাদেশেই ক্ষুদ্র ও বৃহৎ মিল স্থাপন প্রক্রিয়াধীন আছে।

মুক্তাগাছার পামচাষি রিয়াজুল করিম জানান, পাশের মধুপুর উপজেলার একটি নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে ক্ষেতের আইলে রোপন করা হয়।

মুক্তাগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন জানান,  এই গাছ যত বড় হবে তেল উৎপাদন তত বাড়বে।

(ঢাকাটাইমস/২ অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)