খাদিজার সুচিকিৎসা হচ্ছে তো?

আরিফুর রহমান
  প্রকাশিত : ১০ অক্টোবর ২০১৬, ১২:২৭| আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৬, ১৩:১৯
অ- অ+

সিলেটের সরকারি এম সি কলেজের ছাত্রী, আমার বোন, আমাদের বোন খাদিজা আক্তার এখন স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ‘বদ’বদরুলের চাপাতি আক্রোশের শিকার খাদিজার সুচিকিৎসা হচ্ছে তো স্কয়ার হাসপাতালে! আমার শঙ্কাটা ওখানেই।

বাঁ পায়ের জোর শতভাগ ফিরে পাইনি আজো। সড়ক দুর্ঘটনার ১০ মাস পেরিয়েছে। বাঁ পায়ের অ্যাঙ্কেল তিন টুকরো হওয়ার পর এখন যে তবু দাঁড়াতে পারি সেটাই বেশি!

স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ‘বদান্যতায়’ পঙ্গুত্ববরণই তো অবধারিত ছিল। তিন টুকরোর মধ্যে একটি হাড় জোড়া লাগিয়ে দেড় মাস পর স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মেজবাহউদ্দীন আমাকে দুই পায়ের ওপর ভর দিয়ে মেঝেতে দাঁড় করান।

পায়ে ব্যথা তীব্র। তবু হাঁটতে বাধ্য করেন। এবং সাফ বলে দেন, সব ঠিক আছে। ব্যথা থাকবে কিছুদিন, কিন্তু সব ঠিক আছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যথা বাড়ে। পাসপোর্টে সিঙ্গাপুরের ভিসা লাগানো ছিল। দ্রুত সিঙ্গাপুরে যাই। মাউন্ট এলিজাবেথের চিকিৎসক জেফরি চিউ ক্ষত জায়গা দেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, অ্যাঙ্কেলের দু’টি হাড় এখনো ভাঙা। আবারো অপারেশন করলে সুস্থতার আশা আছে। বাধ্য হই আবারো অপারেশন করাতে। এরপর সুস্থ হওয়ার দিকে এগোচ্ছি।

২০ জানুয়ারি ফরিদপুরে মারত্মক সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর ওই রাতে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনা হয় আমাকে। আমার পছন্দের তালিকায় স্কয়ার হাসপাতাল ছিল না। বরং হলিফ্যামিলিই ভালো, নিকটজনদের একথাই বারবার বলেছি। আমার স্ত্রী চিকিৎসক। তাঁর পরামর্শ, স্যামসন এইচ চৌধুরী এত ভালো উদ্যোক্তা; স্কয়ার হাসপাতাল নিশ্চয়ই শতভাগ পেশাদার হবে। অতএব, স্কয়ারই ভালো। সরকারি পঙ্গু হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে ওখানকার কথা কেউই উচ্চারণ করলো না। স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মেজবাহউদ্দীন ছোটখাটো মানুষ। নিঃসন্দেহে আচরণ ভালো। কিন্তু ব্যাকডেটেড। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসককে যখন প্রশ্ন করলাম সে কিভাবে নিশ্চিত হলো যে আমার আরো দুইটি হাড় ভাঙা? কিভাবে তিনি জোড়া লাগাবেন? তাহলে কি বাংলাদেশের চিকিৎসক ভুল করলেন?

জেফরি চিউ হাসলেন। বললেন, অত উন্নত প্রযুক্তি এখনো বাংলাদেশের চিকিৎসকরা ব্যবহার করেন না। তাঁরা নিশ্চয়ই ভালো চিকিৎসক। যা বোঝার বুঝে গেলাম।

প্রশ্ন: মেজবাহউদ্দীন তো শুরুতেই আমাকে রেফার করতে পারতেন অন্য কোথাও। বারবার এই প্রশ্ন আমিই তাঁকে করেছি। বলেছি, আপনি পারবেন তো? নির্ভার মেজাবাহউদ্দীন বরাবরই বলেছেন, আমরা না পারলে কে পারবে?

স্কয়ার হাসপাতালের ওই ভুল সিন্ধান্তের কারণে ১০ মাস ধরে আমার জীবনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ প্রায়। যে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার আমি তার কি হবে!!!!

শুধুই কি আমি! স্কয়ার হাসপাতাল এবং এরকম আরো অনেক হাসপাতালের ভুল চিকিৎসা, ভুল সিদ্ধান্তের শিকার লাখ লাখ মানুষ।

রুখে দাড়াতে হবে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকেও।

লেখক: সম্পাদক, ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাচ্ছেন দুজন গবেষক ও এক প্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রামে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেত্রীকে পুলিশের দিলেন বৈষম্যবিরোধীরা
বাণিজ্য বাধা কমিয়ে আনতে সামুদ্রিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে জোর পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা: নওফেল-রেজাউলসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা