‘নাসিরনগরে উত্তেজনা জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ’

প্রকাশ | ০২ নভেম্বর ২০১৬, ১২:৫৬ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬, ১৩:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার জন্য প্রশাসনের অবহেলা আর ঢিলেমিকে দায়ী করছেন সংখ্যালঘু নেতারা৷ তারা বলছেন, পুলিশকে একদিন আগে হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল। তার পরও স্থানীয়দের নিরাপত্তায় কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। পুলিশ উদ্যোগী হলে এই ঘটনা ঠেকানো যেতো।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদে সমাবেশ ও অবস্থান ধর্মঘটে বক্তারা এ অভিযোগ করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, হবিগঞ্জের মাধবপুর, সুনামগঞ্জের ছাতক, খুলনার মহেশ্বর পাশার ঋষিনগরসহ ১৮টি মন্দিরে হামলা ও তিন শতাধিক হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটতরাজ, অরাজকতা এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের ডাক দেয় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান আদিবাসী পার্টি।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জামায়াত শিবিরের ইন্ধনে একজন নিরাপরাধ মানুষের নাম ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান আদিবাসী পার্টির চেয়ারম্যান মিঠুন চৌধুরী বলেন, ‘একদল উগ্রবাদী মিছিল নিয়ে প্রায় ১৮টি মন্দিরসহ তিন শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে। কিন্তু প্রশাসন কী করেছে? প্রশাসনের এই নীরবতা আমাদেরকে আরও আতঙ্কিত করে তোলে। কার স্বার্থে কার ইঙ্গিতে এই তাণ্ডবলীলা চালানো হলো জাতি আজ জানতে চায়।’

গত শুক্রবার নাসিরনগরের হরিণবেড় গ্রামের এক হিন্দু যুবকের ফেইসবুক পাতায় ইসলাম অবমাননার কথিত পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওউ যুবকের শাস্তির দাবিতে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রীক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ও মাজারপন্থিদের সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কর্মীরা দুদিন পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও জবিগঞ্জের মাধবপুরে মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা নাসিরনগরে হিন্দু মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে ব্যাপক আক্রমণ চালায়।

তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই তাণ্ডব ঠেকাতে পুলিশ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। যদিও পরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে পুলিশ।

মিঠুন চৌধুরী বলেন, ‘হাজার হাজার লোক মিছিল নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালালো, অথচ গ্রেপ্তার হলো মাত্র নয় জন। এভাবে হামলাকারীরা পার পেয়ে যাওয়ায় বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।’

আদিবাসী পার্টির নেতা বলেন, ‘৪৫ বছর পরে সরকার সংখ্যা লঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। চুন থেকে পান খসলেই এখনও অত্যাচারিত হয় সংখ্যালঘুরা।’ সংখ্যালঘুদের রক্ষায় অবিলম্বে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ প্রতিরোধ আইন পাসের দাবি জানানো হয় বিক্ষোভে।

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন, পার্টির যুগ্ম মহাসচিব শ্রী দেবাষীষ সাহা, শ্রী দীপক গুপ্ত, সুনীল মল্লিক প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২অক্টোবর/জিএম/ডব্লিউবি)