শরীয়তপুরে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে ২৯৪ জেলের দণ্ড

প্রকাশ | ০৩ নভেম্বর ২০১৬, ২০:৫৩

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

মা ইলিশ শিকারে গত ১২ অক্টোবর থেকে সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা গতকাল ২ নভেম্বর শেষ হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন গত ২২ দিনে আইন অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রি করায় শরীয়তপুরে ২৯৪ জন জেলে ও ব্যবসায়ীকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও তৎপরতার কারণে এ বছর নদীতে নামা জেলের সংখ্যা অনেক কম ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিনে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ, নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ১০৯ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় ২৯৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। ২২০টি মামলার মাধ্যমে এদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করা হয়।

আটককৃতদের মধ্যে ১৫৪ জনকে সর্বোচ্চ ১ বছর ও সর্বনিন্ম ৭ দিন করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকি ১৪০ জনকে ২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। ২২ দিনে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়।

এছাড়া অবৈধ ইলিশ শিকারের সময় জেলেদের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৯০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। উদ্ধার করা হয় ২ টন ৬শ ৮ কেজি ইলিশ। এগুলো স্থানীয় বিভিন্ন এতিমখানা ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এছাড়া ৩টি মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ৩টি ট্রলার আটক করা হয়।

এদিকে জেলায় মৎস্যজীবিদের চূড়ান্ত তালিকা এখনও সম্পন্ন হয়নি। তবে মোট জেলের সংখ্যা ২৮ থেকে ২৯ হাজার হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। এদের মধ্যে ১৬ হাজার ৩৫৫ জন জেলেকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি করে ৩.২৭ মেট্টিকটন চাল দেয়া হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, প্রশাসন মৎস্য বিভাগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। মাছ ধরা বন্ধের জন্য পুলিশ ও্ র‌্যাব নিয়মিত নদীতে টহল দিয়েছে। তবে দ্রুত গতির আধুনিক নৌযানের স্বল্পতার কারণে শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনার ২০ কিলোমিটার এলাকা নিশ্ছিদ্রভাবে পাহারা দেয়া সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার ফলে প্রতি বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে উৎপাদন ছিল ১.২ মেট্টিকটন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ৫.২ মেট্রিক টন। আর চলতি অর্থবছরে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসেই ইলিশের উৎপাদন ৬.৪ মেট্রিকটনে দাঁড়িয়েছে। এবার ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার কারণে উৎপাদন অনেক বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০৩নভেম্বর/প্রতিনিধি/ ইএস)