সচিবের সমমর্যাদায় জেলা জজ, রায় প্রকাশ

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:১৬ | আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬, ২১:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম তালিকা (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ রায় প্রকাশ হয় বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।

আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়, সাংবিধানিক পদগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম তালিকায় সবার আগে থাকবে। ২৪ নম্বরে থাকা জেলা জজ ও ওই পদমর্যাদার জজদের পদমর্যাদাক্রমে সচিবদের সঙ্গে ১৬ নম্বরে রাখতে বলা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা জজ বা ওই পদমর্যাদার জজদের পদমর্যাদাক্রমে ১৭ নম্বরে রাখার কথা বলা হয়েছে রায়ে।

তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের অধিকতর শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি এ রায় ঘোষণা করেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ওই আদেশ পুরোপুরি গ্রহণ না করে কিছু সংশোধন করা হবে বলে অভিমত দেয়।

হাইকোর্টের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, নতুন ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের প্রথমেই সব সাংবিধানিক পদ গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে। এরপর থাকবে সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদ। আদালত বলেছেন, জেলা জজদের পদ সংবিধানে উল্লিখিত পদ হওয়ায় সাংবিধানিক পদগুলোর পরপরই তার অবস্থান হবে।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়, জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, মুখ্য বিচারিক হাকিম ও মুখ্য মহানগর হাকিমদের পরের ক্রমিকে থাকবেন তিন বাহিনীর প্রধানরা। আর সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অবস্থান হবে তিন বাহিনীর প্রধানদের পরে। একই সঙ্গে আদালত জেলা জজদের রাষ্ট্রাচার (প্রটোকল) প্রদানেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এছাড়া স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, বীরশ্রেষ্ঠ, বীর বিক্রম, বীরোত্তম, বীর প্রতীকদের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের অন্তর্ভূক্ত করার আদেশ দেয়া হয়েছে।

আদালত বলেছেন, সংবিধানে প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, জেলা জজ বলতে অতিরিক্ত জেলা জজকেও বোঝায়। তাই অতিরিক্ত জেলা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের জেলা জজদের পরপরই রাখতে হবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সরকার।

জানা গেছে, সরকারের কার্যপ্রণালী বিধি (রুলস অব বিজিনেস) অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সরকার তা ২০০০ সালে আবার সংশোধন করে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব জজ মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। রিট আবেদনে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সরকারের প্রণীত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বাতিল ঘোষণা করে আট দফা নির্দেশনা দেন।

(ঢাকাটাইমস/১০নভেম্বর/এমএবি/মোআ)