আত্মহত্যা করেছেন দিয়াজ, দাবি পুলিশের, পরিবারের প্রত্যাখ্যান

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:৩৭ | আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬, ১৬:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী আত্মহত্যা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বাহিনীটির কর্মকর্তারা জানান, ঝুলন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে কেন এই ছাত্রলীগ নেতা আত্মহত্যা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি বাহিনীটি।

তবে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়াজের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তরুণকে হত্যা করা হয়েছে। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না অভিযোগ করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চেয়েছে পরিবারটি।

রোববার রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজ বাসায় ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় দিয়াজের। শুরু থেকেই একে পরিকল্পিত হত্যা বলে জানায় দিয়াজের অনুসারী এবং পরিবারের সদস্যরা।

হাটহাজারি উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা বিলকিস জানিয়েছিলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর দিয়াজের গলার দুই পাশে আঁচড়ের চিহ্ন হয়েছে। বাম পাশে আঁচড়ের পরিমাণ ছিল বেশি। এ ছাড়া হাতের কব্জিতে ও পায়েও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। 

উদ্ধারের পর পরই দিয়াজের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সকালে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। চট্টগ্রামের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারি রেজাউল মাসুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দিয়াজ আত্মহত্যা করেছেন বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে।’ তিনি জানান, এই প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম মেডিকেলের একজন একজন অধ্যাপক ও দুইজন সহকারী অধ্যাপকের সই আছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর ঢাকাটাইমসকে বলেস, ‘ফরেনসিক প্রতিবেদন আমি হাতে পেয়েছি। এখানে উল্লেখ আছে এটা আত্মহত্যা।’

আত্মহত্যা হলে দিয়াজের গলায় যে দাগ রয়েছে সেটা কীভাবে হলো-এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তার গলায় যে দাগ পাওয়া গেছে, সেটা আত্মহত্যার সময় বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে।’

দিয়াজ আত্মহত্যা করেছেন জানালেও কেন তিনি এই কাজ করেছেন সে বিষয়ে জানাতে পারেনি পুলিশ। জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুর মিনা ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এ বিষয়ে দ্রুত কারণ জানতে পারবো।’

এর আগে দিয়াজের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা সুরতহাল প্রতিবেদনে তার শরীরের আঘাতের চিহৃ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে বলা হয়, এগুলো আত্নহত্যা করার সময়ই ঘটেছে।

ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই তার অনুসারী ও স্বজনরা একে পরিকল্পিত হত্যা বলে আসছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে কঠোর শাস্তি দেয়ার দাবিতে নানা কর্মসূচিও পালন করে আসছিলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসব কর্মসূচিতে দিয়াজের স্বজনরাও অংশ নিয়েছিলেন।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং পুলিশের বক্তব্য পাওয়ার পরও দিয়াজের স্বজনরা আগের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তার বড় বোন আইনজীবী যোবায়দা সারোয়ার এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, খুনিকে রক্ষা করতে চাইলে একটি মহল। মামলাটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও চেয়েছেন দিয়াজের বড় বোন।

ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/ইখ/এএ/ডব্লিউবি