আবাস সংকটে শাহ জালালের জালালি কবুতর
খাদ্যাভাব ও বাসস্থানের অভাবে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জালালি কবুতর বিলুপ্তির পথে। গত পাঁচ বছর আগেও অন্ধকার নামার আগে মুক্তাগাছা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঝাঁকে ঝাঁকে জালালি কবুতর বড় মসজিদের চূড়ায়, বাড়ির টিনের চালে, পাটের গোদামে উড়ে এসে আশ্রয় নিতো।
ক্রমশ পুরনো টিনের বাড়িঘর, পাটের গুদাম ভেঙে বিল্ডিং তৈরি করায় জালালি কবুতরের বাসস্থান সংকট দেখা দিয়েছে। পৌর এলাকার বড় মসজিদ রোড, দরিচার আনি বাজার, ঢাকাইয়া পট্টি, দুধ মহল, লাইব্রেরি রোড, আটানী বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ছিল বড় বড় পাটের গুদাম। এসব পাটের গুদামে এবং বড় মসজিদের চূড়ার পাশে বাসা বেঁধে বসবাস করত হাজার হাজার জালালি কবুতর।
সম্প্রতি আধুনিকতার ছোঁয়ায় পাটের গুদামগুলো ভেঙে তৈরি করা হচ্ছে সুউচ্চ ভবন।
পুরনো বড় মসজিদটিও ভেঙে নতুন বিল্ডিং করা হচ্ছে। এতে জালালি কবুতরের বাসস্থান সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। দরিচার আনি বাজার, আটানি বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার উন্মুক্ত থাকায় বাজারে উচ্ছিষ্ট খাবার দানা চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত। এই খাবারই ছিল জালালি কবুতরের আহার। এখন বাজারগুলোতে দোকান পাট নির্মাণের ফলে বাজার ঢাকা পড়ে যাওয়ায় মারাত্মক খাদ্যাভাবে পড়েছে জালালি কবুতর।
জালালি কবুতরের বৈজ্ঞানিক নাম কোলমবা লিভিয়া। কলাম্বিডি গোত্রের অন্তর্গত এই পাখিটিকে অঞ্চলভেদে জালালি কৈতর বা গোলা পায়রা হিসাবেও সম্বোধন করা হয়। এর আদি আবাস ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকায়। পৃথিবীর ১ লাখ ৭৪ লাখ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এর আবাসস্থল। বিশ্বে এদের সংখ্যা ২৬ কোটি হলেও বাংলাদেশে এদের সংখ্যা কত তা কারো জানা নেই।
সূত্র জানায়, ১৩০৩ সালে ভারতের দিল্লি থেকে এক জোড়া জালালি কবুতর সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে আনা হয়। এরপর সারাদেশে এর বংশ বিস্তার লাভ করে।
মুক্তাগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রানা মিয়া জানান, বাসস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হলে জালালি কবুতর বিলুপ্তির কবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
(ঢাকাটাইমস/২ ডিসেম্বর/আঞ্চলিক প্রতিনিধি/এলএ)