বাংলাদেশে ছেলেরাই এখন পিছিয়ে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৩৫ | আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:৪৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জেন্ডার সমতার দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীতে এখন দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখন মেয়েরা সব দিক থেকেই ছেলেদেরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিক থেকেও মেয়েরা অসাধারণ সাফল্য দেখাচ্ছে।

সকালে রাজধানীতে বেগম রোকেয়া দিবসে রোকেয়া পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জেন্ডার সমতা নিয়ে যারা কথা বলেন, তাদেরকে আমরা বলি, বাংলাদেশে এখন ঘটনা উল্টা। এখন ছেলেন সংখ্যা কমে যাচ্ছে স্কুল কলেজে বা পরীক্ষার্থী হিসেবে মেয়ের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ঘটনা এখন উল্টো হয়ে গেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরকে ছেলেদেরকে আনতে হবে বেশি। সে ব্যাপারেও আমাদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে যেন সমানভাবে তারা পড়াশোনা করে বেশি।’

শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর এই অগ্রগতিতে ভীষণ গর্বিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখন অন্তত গর্বের সঙ্গে এইটুকু বলতে পারি, শিক্ষা ক্ষেত্রে দেখা যায় মেয়েদের সংখ্যা অনেক স্কুল কলেজে বেশি ছেলেদের থেকে।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৯৬ সালে তিনি যখন প্রথম ক্ষমতায় আসেন, তখন দেশে কোনো নারী সচিব ছিল না, হাইকোর্টে কোনো নারী বিচারক ছিলেন না। জেলায় প্রশাসক বা পুলিশ সুপার পদেও কেউ নারী ছিলেন না। তিনি যখন এই কথাগুলো বলেছেন, তখন অনেকেই চমকে গিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টিতে তিনি সব সময় সচেতন ছিলেন। তৃণমূল পর্যায় থেকে যাতে নারী নেতৃত্ব উঠে আসে তার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩০ শতাংশ কোটা সুনির্দিষ্ট করে দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুব সহজে বলছি, কিন্তু বিষয়টা কিন্তু এতো সহজ ছিল না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা-সংসদের চারটি উচ্চ পর্যায়ের পদই এখন নারীর দখলে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন নারী উন্নয়নের একটা রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা পাচ্ছে। ... জেন্ডার গ্লোব রিপোর্টে বিশ্বে ১৪২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৬৮ তম স্থান অধিকার করেছে। আবার নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সপ্তম স্থান অধিকার করেছে।

মেয়েদের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া নানা কর্মসূচির বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু মুখে বললে হবে না আমাদের অধিকার দাও, অধিকার দাও, অধিকার দাও। অধিকার দেবে কে? অধিকার আদায় করে নিতে হয়। এটা হলো বাস্তবতা। চাইলে সহসা কেউ দেয় না।’

বাংলাদেশ পুরুষশাসিত সমাজ হলেও নারীদের প্রতি আরও সম্মান ও সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের পুরুষ সদস্যদেরকেও মনে রাখতে হবে যে, মায়ের কোলে জন্ম নিয়ে মায়ের হাত ধরে বড় হতে হয়, বোনের হাত ধরে হাঁটা শিখতে হয়। আর স্ত্রী রান্নাবান্না করে সেবা করে আর বৃদ্ধ বয়সে মেয়েই তাদের দেখে। কাজেই মেয়েদেরকে কোনোভাবে অবহেলার সুযোগ নেই।’

(ঢাকাটাইমস/০৯ডিসেম্বর/ডব্লিউবি)