আশুলিয়ার আন্দোলনে ষড়যন্ত্র দেখছেন না শ্রমিক নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১১:৩২

ন্যূনতম মজুরির দাবিতে গত তিন ধরে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে চলে আসা শ্রমিকদের কর্মবিরতি কোনো ষড়যন্ত্রের কারণে হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন একাধিক শ্রমিক নেতা। স্বরাষ্ট্র, শ্রম ও নৌপরিবহন মন্ত্রী এই আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত আখ্যা দিলেও শ্রমিক নেতারা তা নাকচ করে দিয়েছেন।

আশুলিয়ায় গার্মেন্টগুলোতে চলমান শ্রমিক আন্দোলনের ব্যাপারে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন তিন মন্ত্রী। এ ব্যাপারে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাভার-আশুলিয়া আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘১৯৯৩ সালে গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য ৯৩০ টাকা মজুরি ছিল। এরপর দীর্ঘদিন এই শ্রমিকরা এই মজুরিতে কাজ করলেও সরকার কিংবা মালিকপক্ষ কেউই মজুরি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়নি। ২০০৬ সালে শ্রমিকদের কঠোর আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে মজুরি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে এক হাজার ৬৬২ টাকা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করেন। এর চার বছর পর ২০১০ সালে শ্রমিক আন্দোলনের মুখে পুনরায় শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়। পরে ২০১৩ সালে আবার তা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়।

এই শ্রমিক নেতা জানান, শ্রমিকরা যেহেতু শ্রম আইন সম্বন্ধে ধারণা রাখে না তাই তারা প্রতি তিন-চার বছর পর তাদের মজুরি বাড়ানো হবে বলে আশা রাখেন। আর এ কারণেই ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৩ সালের পর ২০১৬ সালেও নিজেদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে তারা কর্মবিরতি করে আসছে। তাই এই আন্দোলনের সাথে কোনো ষড়যন্ত্রের যোগসূত্রতা নেই।

খাইরুল মামুন আরও বলেন, প্রতি বছর বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি পেলেও শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে শতকরা ৫ ভাগ। যা দিয়ে বর্তমান সময়ে একজন শ্রমিকের পক্ষে জীবন নির্বাহ করা খুবই কষ্টকর।

তবে চলমান আন্দোলন নিরসনে কারখানায় কাজ বন্ধ না করে নীরবে আন্দোলন অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন এই শ্রমিক নেতা। একই সঙ্গে সরকারকেও শ্রমিকদের মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণা দিলে চলমান সংকট নিরসন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

অপরদিকে বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তুহিন চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবি অযৌক্তিক নয়। আর এটা কোনো ষড়যন্ত্রও নয়। এই দাবি শুধুই শ্রমিকদের অস্তিত্ব টিকে রাখার জন্য।

তবে কারখানায় মেশিনের চাকা বন্ধ রেখে কখনও দাবি আদায় সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। শ্রম আইনের প্রক্রিয়ায় রিভিউয়ের মাধ্যমে মজুরি বৃদ্ধি করতে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান জানান এই শ্রমিক নেতা। তাই সবাইকে স্বপ্রণোদিত হয়ে কারখানায় ফিরে কাজে যোগ দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত তিন দিন ধরে আশুলিয়ায় প্রায় ২০-২৫ কারখানায় ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন শ্রমিকরা। সোমবার রাতে শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের চার মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সমঝোতা বৈঠক হলেও তা মানেনি শ্রমিকরা।

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :