ভাণ্ডারিয়ায় প্রেসক্লাবের কমিটি নিয়ে বিতর্ক

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:০৮

পিরোজপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।  প্রেসক্লাবের সদস্য সংখ্যা ১২ জন হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে ৩৪ জনের।

ঘোষিত কমিটিতে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলামকে সভাপতি পদ দেয়া হয়েছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম মিলন ভোটাভুটি ছাড়াই নির্বাচিত হন।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর তার নির্বাচনী এলাকা ভাণ্ডারিয়া এলে তার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় প্রেসক্লাবের জমি, নিজস্ব ভবন ও কমিটিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় মন্ত্রীর সাথে। এসময় মন্ত্রী সবাইকে নিয়ে প্রেসক্লাব গঠনের পরামর্শ দেন।

জমি ও ভবন তৈরির বিষয়ে পিরোজপুর জেলা পরিষদের সদ্যবিজয়ী চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস ও সাবেক (সদর) ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার জোমাদ্দারকে নিয়ে বিষয়টি দেখভাল করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।

এসময় জেলা পরিষদের সদ্য বিজয়ী চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল কুদ্দুস ও সাবেক (সদর) ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার জোমাদ্দার উপস্থিত ছিলেন। এরপরই দ্রুতগতিতে কমিটি গঠন নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে সাংবাদিকদের ওই অংশটি।    

অভিযোগ রয়েছে, কথিত সাংবাদিক নেতা কৌশলে ভুল বুঝিয়ে পূর্বের সদস্যদের কারও কারও সই নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, পূর্বের ১২ সদস্য বিশিষ্ট প্রেসক্লাব কমিটির অনেকেরই নাম নেই নতুন এই কমিটিতে। এটা প্রতিষ্ঠানটির গঠনতন্ত্রের সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন কেউ।

নতুন এই কমিটি নিয়ে শুধু ভাণ্ডারিয়া উপজেলাতেই নয়, জেলার পার্শ্ববর্তী উপজেলার প্রেসক্লাব ও কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত নির্বাচনে ‘ভাণ্ডারিয়া বার্তা’ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান দীপু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন দুইজন রিয়াজ মাহমুদ মিঠু ও শফিকুল ইসলাম মিলন। ১২ সদস্যের মধ্যে উভয়ে ছয় ভোট করে পান। সেই নির্বাচনে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন অধ্যক্ষ ও স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলে জানা গেছে।

সম্পাদক পদে সমান ভোটের কারণে এই পদটি নির্ধারণ না হওয়ায় কমিটি কার্যক্রম অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। শফিকুল ইসলাম মিলন পরবর্তী সময়ে তার নিজস্ব দপ্তরকে (শফিক কম্পিউটার সেন্টার) প্রেসক্লাব দাবি করে বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন করেছেন এবং স্থানীয় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর থেকে সাংবাদিকদের নামে ইস্যুকৃত চিঠিপত্র তার দপ্তরে জমা বা কখনও নিজেই গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।

প্রেসক্লাবের সদস্য ১২ জন হলেও ৩৪ সদস্যের কমিটি গঠন নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাণ্ডারিয়া প্রেসক্লাবের এক সদস্য ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সদস্যদের নিয়েই প্রেসক্লাবের কমিটি ঘটন হওয়ার কথা। যারা সদস্য নন তারা গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়মানুযায়ী সদস্য হবেন। তা না করে ১২ জন সদস্যের স্থলে ৩৪ জনের কমিটি ঘোষণা করে দিলেন আর তা সংবাদপত্রে ছেপে ফেললেন।’

এই সাংবাদিক বলেন, ‘কমিটি গঠনের সাধারণ সভা কোথায় হয়েছে, কার সভাপতিত্বে হয়েছে, কার কার সম্মতিক্রমে সর্বসম্মতি হয়েছে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আমার জানানেই। অপর এক মাধ্যমে থেকে জানতে পারি আমাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। পরে ওই কমিটিতে পূর্বের ১২জন সদস্যের নাম খুঁজে না পাওয়ায় আমি স্বেচ্ছায়, আমার পদ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রেস ক্লাবের সদস্য শামসুল ইসলাম ও সভাপতি ম. মহিউদ্দিন খান দীপুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ইএস/ডব্লিউডি)