নেত্রকোণার ছয় রাজাকারের অভিযোগ গঠন ২৫ মার্চ

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার আব্দুর রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য ২৫ মার্চ দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

অভিযোগ গঠনের জন্য মঙ্গলবার দিন নির্ধারিত ছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অসুস্থ হয়ে সিংঙ্গাপুরে থাকায় তা পিছিয়ে ২৫ মার্চ নির্ধারণ করেন আদালত। বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। অপরদিকে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তানিম।

সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি জানান, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় আজ এই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়নি। তাই পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।

গত ২২ সেপ্টেম্বর আদালত মামলায় পলাতক পাঁচ আসামির জন্য গাজী তানিমকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেন।

আসামিরা হলেন- শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মো. আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুর রহমান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন (৭০)। ছয় আসামির মধ্যে গত বছরের ১২ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন আব্দুর রহমান। বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।

গত ২২ মে ছয়জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছেন প্রসিকিউশন। গত ১৬ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটজন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ।

আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুর একটায় রাজাকার বাহিনী নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে মামলা হয় ২০১৩ সালে। শহীদ আব্দুল খালেকের ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা আ. কাদির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

বাদী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির মামলায় অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত তার বড় ভাই আব্দুল হেকিম ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করছিলেন। রাজাকাররা এ খবর জানতে পেরে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে পিঠমোড়া করে বেঁধে মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের খোঁজ খবর জানতে চান। ভাইদের কোনো খোঁজ না দেয়ায় তখন রাজাকার বাহিনী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ঘরে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভাই খালেককে ধরে নিয়ে গিয়ে জারিয়া রাজাকার ক্যাম্পে দুই দিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়।পরদিন ২১ আগস্ট তাকে জারিয়া কংশ নদীর পাড়ে গুলি করে হত্যা করে নদীর পানিতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন রাজাকাররা।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এমএবি/জেবি)