‘পোশাকশিল্পে ৫০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব’

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ২২:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, জ্বালানি ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের  ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ  হওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই জোহান ফ্রাইসেল।

শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকা অ্যাপারেল সামিটে ‘বংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি: ট্রান্সপোর্টেশন অ্যান্ড দ্য রোড অ্যাহেড’ শীর্ষক সেশনে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।

আগামী ২০২১ সালে পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।

সুইডেনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ৫০ বিলিয়ন রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা পূরণ করা সম্ভব। কেননা, এখানকার শ্রমিকরা অনেক পরিশ্রমী। তবে এই লক্ষ্য পূরণে এক্সপোর্ট জোন এবং বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

পোশাকের দাম সম্পর্কে জোহান ফ্রাইসেল বলেন, পোশাকের দাম নির্ধারণ হয় চাহিদার ওপর। এখানে মানসম্পন্ন পণ্য হলে সেটার দাম অবশ্যই ভালো হবে। 



শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলার পরামর্শ  দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত।

এর আগের ‘রেসপনসিবল সোর্সিং ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ’শীর্ষক সেশনে প্যানেল আলোচনায়  পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পোশাকের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত সবার সমন্বয় থাকা দরকার।


এ সময় প্রতিমন্ত্রী সরকারের বাণিজ্যসংক্রান্ত  মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ক্রেতাদের  নিয়ে একটি বৈঠকের পরামর্শ দেন। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম, বলেন, ‘আমি মনে করি তৈরি পোশাকশিল্পের সামনের যে পথ সেটা অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সকে নিয়ে একসঙ্গে চলব।’

গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, পোশাক খাতের উন্নয়নে শ্রমিকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি সামান্য। তৈরি পোশাকের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে শ্রমিকদের উন্নয়ন করতে হবে। তাদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

এই সেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, ড্যান্সক ফ্যাশন অ্যান্ড টেক্সটাইলের সিইও থমাস ক্লোসেন প্রমুখ।

ডিসিসিআইয়ে সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহীমের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুন, বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

শনিবার অ্যাপারেল সামিটের উদ্বোধনী করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকা অ্যাপারেল সামিট-২০১৭ আয়োজন করে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

অনুষ্ঠানে ‘ব্যবসায় নীতি ও পরিবেশ: উন্নত বাংলাদেশের  পথে’, ‘টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য যৌথ ও দায়িত্বশীল উৎস’ এবং বাংলাদেশ পোশাকশিল্প: রূপান্তর ও অগ্রযাত্রা’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেশনগুলোর আলোচনা শিল্পমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য কনডাকটিভ বিজনেস, পরিবেশ ও নীতি, তৈরি পোশাকের সাপ্লাই চেইন টেকসই করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিত উদ্যোগ ও টেকসই অর্থনীতির গুরুত্ব কতখানি, শিল্পের আধুনিকরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ, পোশাক শিল্পের চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয় আলোচনা হয়।

সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্টদূত, উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক ছাড়াও পশ্চিমা বিশ্বের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/জেআর/মোআ)