স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর দুর্গম থানচিতে বিদ্যুৎ

প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০১৭, ০৯:৫২

মংখিং মারমা, বান্দরবান

বান্দরবানের সবচেয়ে দুর্গম উপজেলা থানচি। জেলা সদর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় এই এলাকার বাসিন্দাদের নাগরিক জীবনের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে এ কারণে মৌলিক চাহিদা থেকেও পিছিয়ে রয়েছে থানচিবাসী। স্বাধীনতার প্রায় ৪৬ বছর আজ বুধবার থানচিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।   

বুধবার বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ থানচি উপজেলা সদর এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৬ সালে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয় এবং পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয় গত জানুয়ারি মাস থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,  ৩৫ কেভি লাইনে ৩৫ কিমি, ১১ কেভি লাইনে ২৮ কিমি, ১১/৪ কেভি লাইনে ২কিমি, শূন্য দশমিক ৪ কেভি লাইনে ৫ কিমি, শূন্য দশমিক ২৩ কেভি লাইনে ১০ কিমি এলাকাজুড়েই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে থানচি উপজেলা সদরে তিন শতাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে চিম্বুক পাহাড় এলাকার প্রধান সড়ক থেকে বলিপাড়া ও থানচি উপজেলা সদরসহ আশপাশের এলাকার দুই পাশের পাড়ায় পাড়ায় কমপক্ষে ৫ হাজার পরিবার এবং ৫ শতাধিক দোকানপাট বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মর্কতারা।

দেরিতে  হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে এলাকাবাসী উচ্ছ্বসিত।  উবাথোয়াই মারমা বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা এখন আর পিছিয়ে থাকব না। সারা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও এগিয়ে যাব।’ এখন এলাকায় সব কাজে আমূল পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন তিনি।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রনি মারমা বলেন, ‘বিদ্যুৎতায়নের ফলে এবার থানচি উপজেলার সব জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক  জীবনযাত্রা মান উন্নয়ন, সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, নর-নারী কর্মসংস্থানসহ  শিল্পোন্নয়ন বৃদ্ধি এবং পর্যটন শিল্প প্রসার ঘটবে।

উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিল-কারখানা স্থাপন, সেচসুবিধা, শিক্ষা ও কৃষিক্ষেত্রে আরও সফলতা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারাম। তিনি জানান, ‘এত দিন বিদ্যুৎ ছিল না বলে থানচির চিত্রকে বিশ্বের দরবারে আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এবার বিদ্যুতায়নের সাথে সাথে পর্যটন সম্ভাবনাময় এই উপজেলায় কাঙ্খিত শিল্প বিকাশসহ  আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে।’

রাঙাামাটির বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক উজ্জ্বল বড়–য়া ঢাকাটাইমসকে জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্গম থানচির পাহাড়ি এলাকার সবাইকে বিদ্যুতের আওতায় আনা সম্ভব না হলেও প্রতিটি গ্রামে সোলার স্থাপনের মাধ্যমে সবার চাহিদা পূরণে সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

(ঢাকাটাইমস/১মার্চ/মোআ)