শিবপুরে মুক্তিযোদ্ধা হত্যা: মূল আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০১৭, ১১:৩৫

এম লুৎফর রহমান, নরসিংদী

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বিরাজনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই হত্যামামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দীর্ঘ এগার মাসেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে পারেনি।

বৃহস্পতিবার পলাতক আসামি শাহিন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কান্তি নাথের আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। অপর আসামিরা এখনো পলাতক।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফেরারি আসামিরা বাদীর পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে আসামিরা মামলার সাক্ষী নিহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের ছোট ভাই হারিছ মিয়ার মুরগিরর ফার্ম এবং ৩টি খড়ের গাদায় আগুন দিয়েছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর।

এব্যাপারে আবার শিবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আসামিদের ভয়ে দিন যাপন করছে নিহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই-এর পরিবার।

শিবপুর থানার বিরাজনগর গ্রামের মৃত আব্দুল হাশিমের পুত্র মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে গত বছরের ২৬ মার্চ রাতে বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার দিন রাতে সাড়ে ৯টার দিকে বিরাজনগর বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুল হাই। এসময় ওঁৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে ধরে নিয়ে বাড়ির পাশের একটি জমিতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়।

এ হত্যার ব্যাপারে আব্দুল হাই-এর ছেলে রিমন মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় একই গ্রামের জাকির হোসেন, আমজাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, মো. জাহাঙ্গীরসহ অজ্ঞাত পাঁচ-ছয় জনকে। পুলিশ আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।

অন্য আসামি গ্রেপ্তার না হ্ওয়ায় বাদী পক্ষ মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন জানালে কর্তৃপক্ষ মামলাটি সিআইডিতে প্রেরণ করে। এরপর নরসিংদী সিআইডির এস.আই ইউসুফ হাওলাদার মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। ইতোমধ্যে তিনি মান্নান ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। আমজাদ হোসেনের ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে জানা যায়, এককালের সর্বহারা দলের লিডার শাহীন এ হত্যার মূল নায়ক। অতঃপর সিআইডি পুলিশ জাহাঙ্গীর নামে আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েও কোন তথ্য আদায় করতে পারেনি। 

শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরুণ মৃধা জানান, কুখ্যাত সন্ত্রাসী শাহীনের ভয়ে এলাকাবাসী তো আতংকিত বটেই এমনকি তার মা-বাবাও তার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। সে এলাকার কতিপয় গডফাদারদের সহযোগিতায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে ধরতে সাহস পাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে সিআইডির এসআই ইউসুফ হাওলাদার ঢাকাটাইমসকে জানান, নিহত আব্দুল হাই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি এলাকাবাসীর অতি প্রিয়জন। তাকে সবাই ভালবাসে। তার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।