হোম মেকারদের স্বীকৃতি দরকার

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০১৭, ১৯:৩৬

ড. সাদেকা হালিম

টেকসই উন্নয়ন কাজে নারী ও কন্যাশিশু সমান অবদান রাখা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত তাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এটা হতে পারে না, হওয়া উচিত নয়। তবু হচ্ছে। কেন হচ্ছে, সমস্যা কোথায়?

সমস্যা আসলে আমাদের নীতিতে। নারী যখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে সম্পৃক্ত হয় অথবা নারীর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রশ্ন ওঠে তখন তাদের আমরা করুণার দৃষ্টিতে দেখি। দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখি। অথচ ফরমাল ও ইনফরমাল সেক্টরে ৬২ শতাংশ নারী শ্রম দিচ্ছে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন সুদূরপ্রসারী ও টেকসই করতে প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় নারীর সমান অংশগ্রহণ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ দেশের জনসংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশই নারী। ভাষা আন্দোলন কিংবা মুক্তিযুদ্ধে নারীর গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিল। দেশ গড়ার কাজেও তারা পুরুষের মতো সমান সক্রিয়। কিন্তু তাদের এই অবদানের স্বীকৃতি দিতে আমরা অনেক সময় নিয়েছি। এমনটা হওয়া উচিত ছিল না।

নারী আন্দোলন, সামাজিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রগতিশীল রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। তারপরই নারীর প্রগতির দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে দেখেছি আমরা। আমাদের খুব ভালো একটি সংবিধান রয়েছে। যেখানে নারী-পুরুষকে সমানভাবে দেখা হয়েছে। কিন্তু সংবিধানে যাই-ই থাকুক, নারীদের সেই দৃষ্টিতে দেখা হয় না। উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে সেভাবে সম্পৃক্ত করা হয়নি।

স্বাধীনতার পর বেসরকারি সংগঠনগুলো শুধু পুরুষকেই টার্গেট করত। কিন্তু আমাদের গবেষণা, নানা কর্মকা-, আন্দোলন নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টিতে আনা হলো, নারীদের আলাদাভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে দাবি জানানোর পর ধীরে ধীরে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দেখেছি।

দেশের নারীরা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে এখন অনেক বেশি সক্রিয়। কেউ বসে নেই। বাসা বা বাড়িতে যারা থাকেন, তাদের কর্মহীন বলা যাবে না। কারণ তারা সবাই হোম মেকার। হোম মেকারদের কাজের স্বীকৃতি এখনো দেওয়া হয় না। আর্থিক স্বীকৃতি তো পরিবারের কাছে আমাদের কাম্য নয়, কিন্তু এটা যে একটা কাজ। দায়িত্ব ও গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিটি ঘণ্টা একজন নারীকে তার সংসারে শ্রম দিতে হয়। - সংকলন : জোহরা শিউলী

. সাদেকা হালিম : সাবেক তথ্য কমিশনার

ঢাকাটাইমস/জেএস/টিএমএইচ