নাগেশ্বরীর চরাঞ্চলে আলু-মরিচের চাষ

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৭, ১১:১০

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম

নাগেশ্বরীর চরাঞ্চলে আলু ও  মরিচের  চাষ। বদলে গেছে স্থানীয় কৃষকের ধারণা। এক্ষেত্রে আলু ও মরিচ চাষিকে আলোকবর্তিকা মানছেন তারা। জানা গেছে, বামনডাঙ্গার দুধকুর পাড় লুছনীর চরে পতিত পড়ে আছে প্রায় ৫শ বিঘা জমি। শখের বশে অনেকে দুই-এক চিলতে জমিতে চিনা, গম, মিষ্টি আলুর চাষ করলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। ফলে প্রায় ২০-২২ বছর আগে জেগে ওঠা এ চরের বিস্তীর্ণ জমি দীর্ঘ সময় পতিত ছিল। হতদরিদ্রের পুঁজি সামান্য হওয়ায় চর সম্ভাবনাময় হলেও সাহস করে কেউ ফসল ফলানোর চেষ্টা করত না। তাদের এ ধারণা বদলে দিতে আলোকবর্তিকা হয়ে চরাঞ্চলের মানুষের সামনে হাজির হয়েছেন একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার আবুল কালাম আজাদ।

তিনি নিজ চেষ্টায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ২২ বছরের পতিত প্রায় ৩ একর জমি বিঘা প্রতি ১ হাজার টাকা হিসেবে লিজ নিয়ে সেখানে বেগুন আলু ও মরিচ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সময় মত সেচ, সুষম সার ও বালাই নাশক ব্যবহার করায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে ইঁদুরের উৎপাত তাকে সামান্য বিপাকে ফেলেছে। কুড়িগ্রাম থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অজানা আশঙ্কা ছাপিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কেন এ চরাঞ্চলের জমিতে আলু ও মরিচ চাষ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বলতে পারেন এটি একটি পরীক্ষার অংশ।

তিনি শুনেছেন, এ চর অনন্ত সম্ভবনাময়। কিন্তু এর বুকে কতটুকু সম্ভবনা লুকিয়ে আছে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করতে তার এ উদ্যোগ। তার ধারণা তিনি সফল হলে স্থানীয় কৃষকরা উদ্ভূদ্দ হবে। ফলে কমে যাবে পতিত জমির সংখ্যা। সেখানে উৎপাদিত ফসল তাদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জায়গায় রপ্তানি করে তারা দূর করবে তাদের দারিদ্র্যতা।

স্থানীয় কৃষক ছালাম, রহিম, আক্কাস তাদের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, আমগোরে চরে খেত অইবো হেইডা আমরা কোল ভাবিনাইক্যা। আমরা কোল অহন থাইক্যা আমগোরে জমিতে খেত বুইন্যা ঘরে তুলবার পারুম হেইডা ভাবতে মন আনচান করতাছে।

রফিকুল বলেন, এই প্রথমবারের মত চরে মরিচ ও আলুর চাষ আমাদের অবাক করে দিয়েছে। ফলন বাম্পার হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ তা দেখতে এসেছে। এ অবস্থায় আজাদ ভাইয়ের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে বিস্তীর্ণ জমিতে আলুর চাষের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে স্থানীয় কৃষকরা গ্রহণ করছে। ফলে আগামীতে এ চর হয়তো মরিচ ও আলুর চর হিসেবে নতুন নামে পরিচিত হতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)