মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৭তম জন্মজয়ন্তী

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০১৭, ২০:৩৯

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঝিনাইদহের মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৭তম জন্মজয়স্তী উৎসব উদ্বোধন করা হয়েছে। সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে কবির মাজার প্রাঙ্গণে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মাহাবুব আলম তালুকদার প্রধান অতিথি উৎসবের উদ্বোধন করেন।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু ইউসুফ মো. রেজাউর রহমান, জেলা পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, পাগলা কানাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের  সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম জামান, কবির ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলমমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- পাগলা কানাই-এর গবেষক আক্কাস আলী।

আলোচনা সভা শেষে মুতাছিম বিল্লাহ মিন্টুর চারণ কবি পাগলা কানাই নামক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

উৎসব উপলক্ষে কবির মাজার প্রাঙ্গণে ৩ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের কমসূচির মধ্যে রয়েছে কবির মাজারে পুস্পমাল্য অপর্ণ, মিলাদ মাহফিল, লাঠিখেলা, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও লোক সংগীত অনুষ্ঠান।

২য় দিনের অনুষ্ঠানে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোক সংগীত ও নাটক।

শেষ দিন শনিবার রয়েছে কৌতুক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পালাগানের প্রতিযোগিতা। পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

“জিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেন পরনা, মন তুমি মরার ভাব জান না, মরার আগে না মরিলে পরে কিছুই হবে না/ আমি মরে দেখেছি, মরার বসন পরেছি, কয়েকদিন বেঁচে আছি, তোরা দেখবি যদি আয় পাগলা কানাই বলতেছি।’ এমন শত শত গানের স্রষ্টা মরমী কবি পাগলা কানাই সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় মুত্যবরণ করেন।

জনশ্রুতি রয়েছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি দূরন্ত ও আধ্যাত্মিক স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাইয়ের ঘরে মন না টেকায় এবং অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিল প্রখর। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কন্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সঙ্গীতে যেমন ইসলাম ধর্মেরও তত্ত্বকে প্রচার করেছেন, তেমনি হিন্দু-পুরান রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমায়ের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সর্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে।

(ঢাকাটাইমস/৯মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)