আইসিসির সঙ্গে আরেক লড়াইয়ে বিসিবি

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৭, ২০:০৭

ক্রীড়া প্রতবিদেক,ঢাকাটাইমস

আইসিসি যেসব নতুন নিয়মের কথা বলছে, তাতে দুটি বিষয়ে আপত্তি বাংলাদেশের। টেস্ট রেগুলেশন ও আইসিসির পূর্ণ সদস্য পদকে স্থায়ী না করে প্রতি পাঁচ বছর পর পর রিভিউ করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তার বিপক্ষে লাল-সবুজ ক্রিকেট বোর্ড। এরই মধ্যে আইসিসি চেয়ারম্যানের পদ থেকে হঠাৎই পদত্যাগ করেছেন শশাঙ্ক মনোহর।

আইসিসি পুনর্গঠন করে এর মধ্যে একটা স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মনোহর। আইসিসিকে তিন মোড়ল থেকে প্রভাবমুক্ত করে রাজস্ব আয়ের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগও নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চূড়ান্তভাবে নতুন সংবিধান পাস হওয়ার আগেই তার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ভারতের সাবেক এই বোর্ড সভাপতি।

আইসিসি প্রস্তাব পাস হওয়ার জন্য প্রয়োজন ৮ ভোট। এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে আইসিসির সভায় ৭-২ ভোটে এগিয়ে রয়েছে সংবিধান সংশোধন প্রস্তাবটি। যে ৭টি ভোট এর পক্ষে পড়েছে, সেখানে রয়েছে বাংলাদেশও। আগামী মাসেই আইসিসি কার্যনির্বাহী বোর্ডের আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে আরেকটি ভোট পেলেই সংশোধিত সংবিধানটি পাস হয়ে যাবে। বাংলাদেশ এর পক্ষে থাকলেও এখন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কণ্ঠে ভিন্ন সুর। এ ব্যাপারে পাপন বলেন, আইসিসির রিফর্মেশনের দুটি ব্যাপার আছে। একটি সংবিধানসংক্রান্ত, অন্যটি অর্থবিষয়ক। অর্থনৈতিক বিষয়ে আমরা বাধা দেইনি; কিন্তু সংবিধানসংক্রান্ত ব্যাপারে যে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি সেটার মেম্বার ছিলাম; ওখানে যে ব্যাপারগুলো তোলা হয়েছে সেখানে আমরা অভিযোগ তুলেছি। এমন কিছু ব্যাপার ছিল।’
এর আগে আইসিসির নতুন নিয়ম নিয়ে কোনো অভিযোগ তোলেনি বাংলাদেশ। কিন্তু নাজমুল হাসান এ নিয়ে বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সামগ্রিক বিবেচনায় আমরা রাজি হয়েছিলাম। পরের মিটিংয়ে একটা একটা করে ব্যাপার সামনে এনে ভোটাভুটি করে তা পাস করানোর ব্যাপার ছিল। এই বলে গত মিটিংটা শেষ হয়েছিল। আমাকে অনেকে বলেছিল, আইসিসির রিফর্মেশনের পুরো ব্যাপারটাতে না করে দিতে। কিন্তু আমি বলেছি, বাংলাদেশ যদি বেশি টাকা পায়, বেশি লাভবান হয় সেটা আমি না করব কী করে! নিজের স্বার্থও তো আমাদের দেখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, সবকিছুতে আমি তাদের পক্ষে যেতে পারব না। আমরা চিঠি দিয়ে আইসিসিকে বলে দিয়েছি যে, দুটি ব্যাপার আমরা মানি না। এর মধ্যে একটা হলো, যেটা আগেও চেষ্টা করা হয়েছিল, রেলিগেশন। টেস্টের পূর্ণ সদস্য থেকে যেটার মাধ্যমে নিচে নামার শঙ্কা আছে। আমরা বলেছি কোনো অবস্থাতেই এটা মানব না। এখন সম্ভাবনা আছে জিম্বাবুয়ের বাদ পড়ে যাওয়ার; পরে অন্যদেরও হতে পারে।’

শুধু রেলিগেশন নয়, পূর্ণ সদস্যপদের স্থায়িত্বও যেন বাদ না যায় সে ব্যাপারে সোচ্চার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এ নিয়ে পাপন বলেন, আমরা বলেছি পূর্ণ সদস্যপদ কখনো পরিবর্তন করা যাবে না। এটা আমরা মানি না। অন্যটা হলো, ভোটের অধিকার। এটা নিয়েও আমরা আপত্তি জানিয়েছি। এখন আমাদের ৭৫ শতাংশ অধিকার। এখন নতুন স্বাধীন পরিচালক নিচ্ছে, সহযোগী সদস্য বাড়ছে; আমাদের আগে সব বিষয় বুঝতে হবে। এই সব বিষয় জানিয়ে আমরা আইসিসিকে চিঠিটা দিয়ে দিয়েছি।’

বিসিবি বিরোধিতা করলেও কী সংশোধিত সংবিধান পাস করানোর সুযোগ তাহলে থাকছে কি? এ নিয়ে পাপন বলেন, না, আমাদের মতামত ছাড়া এসব বিষয় পাস করানোর সুযোগই নেই। আইসিসির সংবিধানে আগে যা ছিল, তাই আছে। যে সব বিষয়ে আমাদের স্বার্থ জড়িত, আমরা এর বিরুদ্ধে যাব না। এটা আগেও আমি বলেছি। এখনো বলছি।’
আইসিসির নতুন নিয়মের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কাও রয়েছে। যদিও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট রয়েছে এই ভোটের বাইরে। তাই তো বিসিবির হঠাৎ সুর পাল্টানো ভালো সমস্যায় ফেলে দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির। এখন দেখার বিষয় আগামী মাসে আইসিসির সভায় এ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত আসে?

 (ঢাকাটাইমস/২০র্মাচ/চর)