এনজিওর ঋণের বোঝায় গৃহবধূর আত্মহনন

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৭, ১২:৩৩

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

যশোরে এনজিওর লক্ষাধিক টাকা ঋণের বোঝা বইতে না পেরে মণিরামপুরে সামেলা বেগম নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজ বাড়িতে গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

সামেলা বেগম উপজেলার পূর্ব হোগলাডাঙ্গা গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী।

এই ঘটনায় মণিরামপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

সামেলার স্বজনরা জানায়, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক ও অগ্রগতি নামে তিনটি এনজিও থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন সামেলা। তার স্বামী আবুল কালাম হতদরিদ্র ভ্যানচালক। পরিবারটিকে প্রতি সপ্তাহে আশা এনজিওকে এক হাজার ৮৫০ টাকা, অগ্রগতিকে ৬৫০ টাকা এবং গ্রামীণ ব্যাংককে ৩০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। ভ্যান চালিয়ে এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভবপ্রায়।

সামেলার চার ছেলে দিনমজুর। বাবা-মাকে কোনো সাহায্য করতে পারেন না তারা।

এনজিওর কিস্তি শোধ করা নিয়ে রাতে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয় সামেলার। তার জের ধরে আত্মহত্যা করেন তিনি।

সামেলার পুত্রবধূ মুন্নি খাতুন বলেন, ঋণের কিস্তি, সংসারের অভাব তো আছেই। তার ওপরও ঘটনার দিন বাড়িতে আত্মীয় এসেছেন। ঘরে টাকা-পয়সা ছিল না। এসব নিয়ে রাতে শ্বশুরের সাথে শাশুড়ির ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাশুড়ি বাপেরবাড়ি চলে যাচ্ছিল। আমি তাকে ধরে এনেছি। ভোরে শ্বশুর নামাজ পড়তে যায়। বাড়ি ফিরে দেখে শাশুড়ি গলায় ওড়না দিয়ে গাছের সাথে ঝুলছে।

মণিরামপুর থানার এসআই নাছির বলেন, শুনেছি- নিহতের তিন-চারটা এনজিওর ঋণের কিস্তি আছে। তাছাড়া সংসারে অভাব-অনটনের কারণে স্বামীর সাথে ঝগড়া হয়েছে। সেই কারণে আত্মহত্যা করেছে সামেলা।

হতদরিদ্র একটি পরিবারকে কীভাবে ৭০ হাজার টাকা ঋণ দিলেন- এমন প্রশ্নে আশার মণিরামপুর শাখার ব্যবস্থাপক সুজা আহম্মেদ লাভলু বলেন, শুনেছি- ইনজিনভ্যান কেনার জন্য তারা লোন নিয়েছে। আমি নতুন এসেছি। এর বেশি কিছু জানি না।

(ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)