বড়হাটে ছিন্নভিন্ন তিন ‘জঙ্গি’র ময়নাতদন্ত

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:১৬ | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৭, ১৫:১৯

মাহবুবুর রহমান, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের বড়হাট এলাকায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানা থেকে তিন জনের ছিন্নবিচ্ছিন্ন মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এই তিন জনের মধ্যে দুই জন পুরুষ এবং একজন নারী।

রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত এই ময়নাতদন্ত করা হয় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে। চিকিৎসালয়টির সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সুব্রত কুমার রায়, জুনিয়র কনসালট্যান্ট আবু ইমরান ও আরএমও পলাশ রায় এই দায়িত্ব পালন করেন।

মঙ্গলবার গভীর রাতে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানাটি ঘেরাও করার পর শনিবার এর ভেতরে ঢুকে পুলিশ। সেখানে তিন জনেরই মরদেহ পাওয়া যায়। বাহিনীটি জানিয়েছে, তারা সেখানে যাওয়ার আগেই গায়ে বাঁধা সুইসাইডাল ভেস্টে থাকা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিহত হন এই তিন জন। এই বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তিন জনের দেহগুলোই টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে কক্ষ জুড়ে। এর একটি ছবিও এসেছে ঢাকাটাইমসের কাছে। তবে সেটা কোনোভাবেই প্রচারের যোগ্য নয়।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক পলাশ রায় বলেন, ‘ছিন্নভিন্ন লাশের যেসব অংশ এসেছে তার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এদের দুই জন পুরুষ ও একজন নারী। নারীর বয়স আনুমানিক এবং পুরুষ দুই জনের একজনের ৩৮ ও অপরজনের ৪২ বছর।

পুলিশ জানিয়েছিল, তারা বাড়িটিতে ঢোকার আগের দিনই এই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক পলাশ রায়ও বলেছেন এমন কথাই। তিনি বলেন, ‘লাশগুলোতে  মাটা তারের টুকরোর মতো ধাতব বস্তু পাওয়া গেছে। লাশগুলো এখানে আনার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগেই তাদের  মৃত্যু হয় বলে মনে হচ্ছে।’

এই আস্তানায় নিহতদের কারও পরিচয় এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে তাদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেও তাদের মুখম-ল অক্ষত রয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রতিটি লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে তারা মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট আবুশাহ দাখিল মাদ্রাসা গলিতে দোতলা বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা হিসেবে শনাক্ত করে ঘিরে রাখে পুলিশ। ওই বাড়ি ঘিরে রাখার পরে সেখানকার তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বুধবার ভোরে শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে নাসিরপুর গ্রামে আরও একটি সন্দেহভাজন জঙ্গি অস্তানা শনাক্ত হয়।

বৃহস্পতিবার নাসিরপুর আস্তানায় ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ এর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি বড়হাটের আস্তানটি তারা ঘিরেই রাখে। অভিযান শেষে নাসিরপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে ‘ছিন্নভিন্ন সাত থেকে আটজনের লাশের অংশ’ পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। পুলিশের ধারণা, বুধবার বিকেলেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা নিহত হয়। তারা একই পরিবারের সদস্য।

শুক্রবার মৌলভীবাজারের বড়হাটে জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন মেক্সিমাস’ শুরু হয়। শনিবার ওই বাড়ি থেকে তিন জনের ছিন্নভিন্ন মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকাটাইমস/০২এপ্রিল/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি