পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরকে পাহাড়িদের বিদায়
প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:০৩ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭, ১৪:০৫
সুন্দর নতুনের আহবানে পানিতে ফুল ভাসিয়ে বাংলার পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়েছে পাহাড়ের আদিবাসীরা। বুধবার ভোরে কর্ণফুলী, চেঙ্গী, মাইনী, কাচালং, রেইংখ্যং নদীর সংযোগস্থল কাপ্তাই হ্রদসহ পাহাড় থেকে নেমে আসা হাজারো ছড়ার পানিতে ফুল ভাসায় আদিবাসীরা।
সকাল ৭টায় রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারের পূর্ব ঘাটে এবং গর্জনতলিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠান করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন।
আদিবাসীরা মনে করেন, এ দিনে (২৯ চৈত্র) পানিতে ফুল ভাসিয়ে দিলে পুরনো বছরের সব গ্লানি মুছে যায়। পানির স্রোতে ফুলের সাথে পুরনো বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের নতুন দিনগুলো বয়ে আনে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি। যুগ যুগ ধরে এই সংস্কৃতি লালন পালন করে আসছে আদিবাসীরা।
রাজবাড়ি ঘাটের ফুল ভাসানো অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।
এসময় তিনি বলেন, শুধু নতুন বছর নয় এখানে পুরনো বছরকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যেমে আদিবাসীরা পুরনো বছরের খারাপ দিকগুলো ত্যাগ করে ভালগুলো সাথে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা খুঁজেন।
এই উৎসবে চৈত্রকে সামান গুরুত্ব দেয়া হয়। নিজেদের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার উদযাপিত হবে মূল বিজু। এ দিনে আদিবাসীদের বাড়িতে চলবে খানাপিনার আয়োজন।
এদিনে সবার বাড়িতে রান্না হবে পাজন (হরেক রকম সবজি দিয়ে রান্না করা বিশেষ তরকারি)।
শুক্রবার হবে গজ্জ্যাপজ্যা দিন (নতুন বছর)। এদিন বয়োজ্যষ্ঠদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। বৌদ্ধ সাধকদের দিয়ে মঙ্গল সূত্রের মাধ্যমে আত্মপরিশুদ্ধ হবেন বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীরা। অন্যরাও ধর্মীয় পুরহিত দিয়ে নিজেদের পরিশুদ্ধ হবেন।
পাহাড়ের বসবাসরত ১৩টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই উৎসবকে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বলে বৈসু, মারমারা সাংগ্রাই, চাকমারা বিজু, অন্যরা বিষু, বিহু, চাংক্রান ইত্যাদি। এসব আদি অক্ষর দিয়ে বলা হয় বৈসাবী। যদিও বৈসাবী নামে কোন জনগোষ্ঠী এ উৎসব পালন করেন না।
আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল মারমাদের জল উৎসবের মধ্যদিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠিকতা শেষ হবে।
(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)