কিশোরগঞ্জের দুই রাজাকারের রায়ের অপেক্ষা

প্রকাশ | ১৯ এপ্রিল ২০১৭, ১০:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

কিশোরগঞ্জের সৈয়দ মো. হোসেইন ও মোহাম্মদ মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় দেয়া হবে কিছুক্ষণের মধ্যে। মোসলেম প্রধানকে ইতোমধ্যে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আর হোসেইন পলাতক রয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে গঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীর সদস্য হয়ে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন, অপহরণ ও নির্যাতনের ছয় অভিযোগ রয়েছে এই দুই আসামির বিরুদ্ধে।

প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে গত ৭ মার্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে ট্রাইব্যুনাল। দুই আসামির মধ্যে মোসলেম প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হলেও হুসাইন এখনো পলাতক আছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ।

গত বছরের ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কামারহাটি গ্রাম থেকে মোসলেমকে গ্রেপ্তার করলেও সৈয়দ হোসাইনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এর আগে গত বছরের ৯ মে এই দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর এই দুইজনের বিরুদ্ধে হত্যা ও গণহত্যাসহ  আনুষ্ঠানিক ছয়টি অভিযোগ দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

প্রথম. নিকলীর দামপাড়া গ্রাম ও নিকলী থানা ভবন, সদরের মহাশশ্মান এলাকায় একাত্তর সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হোসাইনের বিরুদ্ধে ছয় নারীকে ধর্ষণ, সুধীর সুত্রধরসহ ৩৫ জনকে হত্যা ও বাদল বর্মনসহ চারজনকে নির্যাতন।

দ্বিতীয়. নিকলী বাজার ও থানা কম্পাউন্ড এলকায় হোসাইন ও মোসলেমের নেতৃত্বে একাত্তরের ২ সেপ্টম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত কাশেম আলীসহ চারজনকে আটক ও নির্যাতন।

তৃতীয়. নিকলীর গুরুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফুল মিয়াসহ ২৬ জনকে হত্যা এবং ২৫০টি বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ।

চতুর্থ. নিকলীর নানশ্রী গ্রামে একাত্তর সালের ২১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তোফাজ্জল খান জিতুসহ সাতজনকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ হোসাইনের বিরুদ্ধে।

পঞ্চম. একাত্তর সালের ১০ অক্টোবর নিকলী সদরের পূর্বগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল মালেককে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগ হোসাইন ও মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে।

ষষ্ঠ. ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল জাহান ও মো. সেলিমকে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ রাজাকার হোসাইন কিশোরগঞ্জ পৌরসদর, প্যারাভাঙা ও শোলাকিয়ায় রিকশা দিয়ে ঘুরিয়েছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল জাহানের মাকে তার ছেলের রক্ত দেখিয়ে বীভৎসতা প্রদর্শন করেছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/জেবি)